আটঘরিয়ায় গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

: আটঘরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩ দিন আগে

39

পাবনার আটঘরিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে লাভলী খাতুন (২৮) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নের রোকনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত লাভলীর স্বামীর নাম কনক হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু ইউসুফ।

নিহতের পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কনক হোসেন ও একই গ্রামের আজহার আলীর ছেলে সবির আলীর মধ্যে বিলের জালে মাছ ধরা নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন কনক তার বিষ মেশিনটি মেরামত করার জন্য মুলাডুলি বাজারে গেলে এ সুযোগে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা কনকের বাড়ির পেছনের বেড়া ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে।

তারা কনকের কণ্ঠস্বর নকল করে “দরজা খোল” বলে ডাক দেয়। স্বামীর কণ্ঠ শুনে দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে লাভলী খাতুনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে তারা গৃহবধূর গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। ধস্তাধস্তির সময় লাভলীর ৮ বছরের ছেলে সজীব ঘুম ভেঙে চিৎকার শুরু করলে দুর্বৃত্তরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উঠানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

পরে কনক বাড়ি ফিরে এসে উঠানে স্ত্রীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। বৃহস্পতিবার সকালে লাভলীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হলে হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতির সময় সকাল নয়টার দিকে তিনি বাড়িতেই মারা যান।

নিহতের ছেলে সজীব জানায়, “আমি চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে। দেখি তিনজন কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে আমার মাকে গলা টিপে মারছে। তাদের দেখে আমি চেঁচিয়ে উঠলে তারা পালিয়ে যায়।” সজীব আরও জানায়, “মায়ের গলা ও হাতে দাগ ছিল।”

লাভলীর স্বামী কনক হোসেন বলেন, “আমার সঙ্গে প্রতিবেশী সবির গংদের বিরোধ অনেকদিনের। ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। ফিরে এসে দেখি আমার স্ত্রী নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছে। আমার ছেলে জানায়, তিনজন মুখোশধারী লোক আমার স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।”

এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুজ্জামান সরকার বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। তদন্ত চলছে এবং এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।”

গ্রামজুড়ে এই হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। পুলিশ জানায়, তদন্ত শেষে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।