
পাবনার চাটমোহরে আলোচনার ঝড় তুলেছে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। গত ১৩ আগস্ট (বুধবার) সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন চাটমোহর থানায় কর্মরত এএসআই শাকিল আহমেদ। ঘটনাটি নিয়ে পুরো এলাকায় তীব্র গুঞ্জন চলছে।
এএসআই শাকিল আহমেদ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাসিন্দা। অন্যদিকে প্রবাসীর স্ত্রী মাসুরা খাতুন নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার বাসিন্দা। তিনি গুনাইঘাছা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য বজলুল হকের ছেলে শহীদের স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাসুরা খাতুন প্রথমে চাটখিলের এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে করেন এবং সেই সংসারে একটি সন্তানও জন্ম নেয়। কিন্তু সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হলে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। পরে কর্মসূত্রে পরিচয় হয় রামচন্দ্রপুর গ্রামের শহীদের সঙ্গে এবং প্রেমের পরিণতিতে বিয়ে হয়। এরপর মাসুরার শ্বশুর শহীদকে সৌদি আরবে পাঠান কর্মের জন্য।
স্বামী বিদেশে থাকা অবস্থায় শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মাসুরা দুই সন্তান নিয়ে চাটমোহর পৌরসদরের চৌধুরীপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতে শুরু করেন। এদিকে এএসআই শাকিলেরও ব্যক্তিগত জীবন ছিল জটিল—প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রী (একজন কনস্টেবল) ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার করছিলেন তিনি।
প্রায় ছয় মাস আগে শাকিল চাটমোহর থানায় যোগদানের পর থানার পেছনের চৌধুরীপাড়ায় বসবাসরত মাসুরার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয় এবং নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় শাকিলের। অবশেষে ১৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সব বাধা উপেক্ষা করে দু’জনে আত্মগোপনে চলে যান।
ঘটনার পর থেকে উভয় পরিবারই বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করলেও তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। এ নিয়ে চাটমোহর পৌর এলাকা এবং আশপাশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন—ওপেন হাউজ ডে চলাকালীন কর্তব্যরত একজন পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণ পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তাদের ভাষ্য, প্রশাসনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ও অশোভন আচরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। একই সঙ্গে শহীদের পরিবার মাসুরা খাতুনের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিষয়ে শাকিল আহমেদের পরিবারের দাবি—”আমরা বিষয়টি জেনেছি, তবে সে এখনো বাড়িতে ফেরেনি।”
চাটমোহর সার্কেলের সিনিয়র এএসপি আঞ্জুমা আক্তার জানান—”আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। বিষয়টি তদন্তের পর এএসআই শাকিলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”