
কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক দীর্ঘদিন ধরে দুই জেলার মানুষের প্রধান যাতায়াতের মাধ্যম। কিন্তু প্রায় দুই বছর ধরে উন্নয়নকাজ বন্ধ থাকায় সড়কটি এখন পরিণত হয়েছে দুর্ভোগের আরেক নাম। খানাখন্দ আর দীর্ঘ যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
আগে যেখানে কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌঁছাতে সময় লাগত দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা, এখন সেখানে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যাচ্ছে। এতে করে কর্মজীবী মানুষ, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছেন সড়কে। সময়ের অপচয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও। কৃষিপণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় ব্যবসায়ী ও কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়ছেন।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে এই মহাসড়ককে চার লেন ও দুই পাশে সার্ভিস লেন করার জন্য একনেকে অনুমোদন হয়। মোট ৫৪ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে কেবল কুমিল্লাতেই পড়েছে ৪০ কিলোমিটার। ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকার ব্যয়ে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ অর্থায়নে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পটি অচল হয়ে পড়ে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশীষ মুখার্জি জানান, ভূমি অধিগ্রহণের কাজ এগোলেও ভারত বিনিয়োগ করবে না বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে। কুমিল্লা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘‘তহবিল সংকটের কারণে কাজ স্থগিত আছে। তবে বিকল্প বিনিয়োগকারীর সন্ধান চলছে এবং এর মধ্যে আংশিক সংস্কার কাজ শুরু হবে।’’
অব্যবস্থাপনার কারণে সড়কটি ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শুধু কুমিল্লা অংশেই গত দুই বছরে ১০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৯২ জন। শিক্ষার্থী ও রোগীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রেও এই সড়ক এখন ভোগান্তির প্রতীক।
এদিকে সড়কের বেহাল অবস্থার প্রতিবাদে গত ২৭ আগস্ট স্থানীয়রা ময়নামতি থেকে কোম্পানীগঞ্জ পর্যন্ত নয়টি স্থানে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তা তুলে নিলেও মানুষ এখনও দ্রুত সমাধানের অপেক্ষায়।