
পাবনার চাটমোহর উপজেলার ভেংড়ি গ্রামের ঐতিহ্যবাহী দিয়ানতুল্লাহ মোল্লা ওয়াকফ এস্টেট-এ আর্থিক অনিয়ম ও অযোগ্য মোতওয়াল্লীর বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত পরিচালনা করা হয়েছে।
গত ১১ অক্টোবর সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে মসজিদ প্রাঙ্গণে এ তদন্ত পরিচালনা করেন সহকারী ওয়াকফ প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইনস্পেক্টর আলহাম আব্দুল্লাহ, হেড অফিসের কর্মকর্তা মোঃ নুর হাসান, ওয়ারিশ ও গ্রামবাসীর প্রতিনিধি এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অভিযোগকারীরা জানান, বর্তমান মোতওয়াল্লী মোঃ রফিকুল ইসলাম এস্টেট পরিচালনায় অযোগ্য। তিনি তার ভাই আব্দুল লতিফ ও মোঃ সাজেদুল-এর সহযোগিতায় গোপনে কমিটি গঠন করে নানা আর্থিক অনিয়ম করছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, ওয়ারিশদের ন্যায্য ভাতা প্রদান করা হচ্ছে না এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নাম করে অর্থ আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ওয়ারিশদের পক্ষের প্রতিনিধি মোঃ শামস তাসবীর সজীব বলেন, “ওয়াকফ এস্টেটের সব লেনদেন সোনালী ব্যাংকের নামীয় অ্যাকাউন্টে হয়। মোতওয়াল্লী ছাড়া অন্য কারও অর্থ লেনদেনের সুযোগ নেই।”
অন্যদিকে, রেকর্ডভুক্ত মোতওয়াল্লী ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ আকবর আলী অভিযোগ করে বলেন, “বর্তমান মোতওয়াল্লীর অযোগ্যতার কারণে এস্টেটের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই দ্রুত নতুন কমিটি গঠন করা জরুরি।”
লিজগ্রহীতা মিলন হোসেন বলেন, “মোতওয়াল্লীর অব্যবস্থাপনার কারণে পুকুরে গ্যাস নির্গমনে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মাছ মারা গেছে।”
গ্রামবাসীর পক্ষে মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, “বছরের পর বছর এই মসজিদ ও এস্টেটের দ্বন্দ্ব চলছে। প্রশাসনের উচিত একটি সুষ্ঠু ও যোগ্য পরিচালনা কমিটি গঠন করা।”
তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সব পক্ষের বক্তব্য, লিখিত কাগজপত্র ও সাক্ষ্য আমরা গ্রহণ করেছি। বিষয়টি দীর্ঘদিনের জটিলতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে জড়িত। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘদিন ধরে এস্টেটের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে ধর্মীয় কার্যক্রম ও জনসেবামূলক উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপই এ জটিলতার সমাধান আনতে পারে বলে মনে করছেন তারা।