
বাংলাদেশে সরকারি দপ্তরের দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পেলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে কেবল বদলি করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতি উন্মোচনকারী সাংবাদিকদের হতে হচ্ছে হামলা, মামলা ও নানা হয়রানির শিকার।
টেকনাফ, পিরোজপুর, ভোলা, মনপুরা, পটুয়াখালী, খুলনা, কুমিল্লা, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সিলেট, কুষ্টিয়া, রংপুর, ঠাকুরগাঁও ও গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একই ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অভিযোগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বদলির মাধ্যমে দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন, অথচ অনুসন্ধানী প্রতিবেদকরা টার্গেট হচ্ছেন সন্ত্রাসী চক্র ও প্রভাবশালী মহলের কাছে।
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী দুর্নীতি বা অসদাচরণের অভিযোগ উঠলে তদন্ত ও শুনানির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। বাস্তবে তবে অনেক ক্ষেত্রে বদলিই হয়ে উঠছে ‘সমাধান’, ফলে অভিযোগ চাপা পড়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে সাংবাদিকরা পড়ছেন চরম ঝুঁকির মুখে। কেউ হয়েছেন হামলার শিকার, কারও বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলা, আবার কেউ কারাভোগও করেছেন। অথচ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এবং জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা, ২০১৭ স্পষ্টভাবে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়।
একইভাবে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ অনুযায়ী অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুদকের অনুসন্ধান শুরু করার কথা থাকলেও বাস্তবে সেই উদ্যোগ খুবই দুর্বল।
ফলে সাংবাদিক মহল প্রশ্ন তুলেছে কেন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা রক্ষা পাচ্ছেন, আর সত্য প্রকাশকারীরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন? তাদের দাবি, অবিলম্বে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দুর্নীতির অভিযোগে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর তদন্ত করতে হবে।