শারদীয় দুর্গোৎসবের পাঁচ দিনব্যাপী আনন্দঘন সময় শেষে আসে এক আবেগঘন পর্ব— বিজয়া দশমী। এই দিনে শাস্ত্রীয় মতে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করে মর্ত্যলোক থেকে কৈলাসে ফিরে যান। ভক্তদের হৃদয়ে উৎসবের আনন্দ শেষে নেমে আসে এক মধুর-বিষাদের সুর।
সমাপ্তির আচার
দশমীর সকালে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ বিহিত পূজা। এরপর ঘটে দর্পণ বিসর্জন, যা দেবীর আনুষ্ঠানিক বিদায়ের প্রতীক। সন্ধ্যায় শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় নদী বা জলাশয়ে। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে কেবল প্রতিমার নিরঞ্জন নয়, বরং ভক্তদের অন্তরের কাম, ক্রোধ, হিংসা ও লালসা বিসর্জনের বার্তা নিহিত থাকে। বিসর্জনের পর সংগৃহীত শান্তিজল ধারণ করে নতুন বছরের মঙ্গল কামনা করা হয়।
সিঁদুর খেলার মাধুর্য
বিজয়া দশমীর অপর এক আকর্ষণ হলো বিবাহিত নারীদের সিঁদুর খেলা। প্রতিমা বিসর্জনের আগে দেবীর চরণে সিঁদুর অর্পণ করা হয়। এরপর নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে দীর্ঘায়ু, সংসারের সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্য কামনা করেন। এই আচারকে ঘিরে ঢাকের বাদ্যি, উলুধ্বনি আর রঙিন আবহে মণ্ডপগুলো উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে। নারীরা হাসিমুখে একে অপরের গালে ও কপালে সিঁদুর মেখে বন্ধন ও ভালোবাসার প্রতীকী প্রকাশ ঘটান।
আনন্দ-বিষাদের মিশ্রণ
দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ভক্তদের মনে এনে দেয় একইসঙ্গে আনন্দ ও বেদনার স্রোত। বিদায়ের ব্যথা থাকলেও, পরের বছর আবার দেবী মায়ের আগমনের প্রতীক্ষা সকলের হৃদয়ে নতুন আশার আলো জ্বালিয়ে তোলে। সিঁদুর খেলার উচ্ছ্বাস এই বিষাদের মাঝেও এক অমলিন মাধুর্য যোগ করে, যা দুর্গোৎসবের সমাপ্তিকে আরও স্মরণীয় করে রাখে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ লুৎফর রহমান হীরা
হেড অফিসঃ ১/ জি,আদর্শ ছায়ানীড়, রিংরোড, শ্যামলী, আদাবর ঢাকা - ১২০৭।
স্বত্ব © ২০২৫ চলনবিলের সময়