নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, মাদকাসক্ত ছেলে আটক

: পাবনা জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ঘন্টা আগে
ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড়। ছুরি হাতে অভিযুক্ত মোস্তফাকে আটক করেছে পুলিশ।

36

পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের পুরাতন ভাদুরডাঙ্গা গ্রামে নামাজরত অবস্থায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত এক ছেলে। রবিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম নিজাম প্রামানিক (৬০)। তিনি স্থানীয় মৃত ইন্তাজ প্রামানিকের ছেলে এবং পেশায় কৃষক ছিলেন।

অভিযুক্ত ছেলে মোস্তফা প্রামানিকও কৃষিকাজ করতেন, তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাদকে আসক্ত ছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় নিজাম প্রামানিক নতুন বাজারে দুধ বিক্রি শেষে বাড়ি ফেরেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে তিনি ঈশার নামাজে দাঁড়ান। এসময় তার ছেলে মোস্তফা দরজা বন্ধ করে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এরপর পাশের ঘরে গিয়ে নিজেই দরজা বন্ধ করে বসে থাকে।

পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘক্ষণ কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরে প্রবেশ করলে দেখেন নিজাম প্রামানিকের নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে এবং মোস্তফাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

আটকের সময় মোস্তফা পুলিশের ওপর ছুরি দিয়ে হামলা চালায়। এতে সদর থানার তিন উপপরিদর্শক (এসআই) — আবু বকর সিদ্দিক, জিয়াউর রহমান ও আবু রায়হান আহত হন। আহত এসআই জিয়াউর রহমানকে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে, অন্য দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

নিহতের আরেক ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, “আমার ভাই মোস্তফা প্রায়ই মাদকের জন্য বাবা ও আমাদের কাছ থেকে টাকা চাইত। না দিলেই বাড়িতে ভাঙচুর চালাতো। এর আগেও আমাকে মেহগনি ঢাল দিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছিল। আজ নামাজরত বাবাকেও হত্যা করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “ওই ছেলেকে যদি এখনই ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয় বা ফাঁসি দেওয়া হয়, আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। এমন ঘৃণ্য হত্যাকারীর কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।”

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, “মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে, বিস্তারিত তদন্ত চলছে।”