আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে পাবনায় পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে দাম না থাকায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন জেলার পান চাষিরা। উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
বাংলা সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ পান— আতিথেয়তা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা সামাজিক আচার— সবখানেই রয়েছে এর বিশেষ স্থান। সেই ঐতিহ্যের ধারক হয়ে উঠেছে উত্তরাঞ্চলের কৃষিভিত্তিক জেলা পাবনা। এখানকার বিভিন্ন উপজেলায় পান চাষ এখন সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজে মোড়ানো পান বরজের মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে পাবনার আটঘরিয়া, চাটমোহর ও বেড়া উপজেলায়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন আশানুরূপ হয়েছে। কিন্তু ফলন যত ভালোই হোক, বাজারে পানির মতো দাম না পাওয়ায় ক্ষোভ জমছে চাষিদের মনে।
আটঘরিয়া উপজেলার বরুলিয়া গ্রামের পান চাষি ইকরাম হোসেন তিন বিঘা জমিতে পান চাষ করেছেন। তিনি জানান, “এ বছর পানের ফলন ভালো, কিন্তু দাম নেই বললেই চলে। শ্রমিকের মজুরি ও উৎপাদন খরচ দিয়েই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে, হাতে কিছুই থাকছে না।”
একই অভিযোগ আরও অনেক চাষির। ভালো ফলনের পরও বাজারে ক্রেতা কম, ফলে দাম নেমে গেছে তলানিতে। অনেকেই বাধ্য হয়ে বরজ থেকেই কম দামে পান বিক্রি করছেন।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম প্রামানিক বলেন, “পোকামাকড় দমনসহ সব ধরনের কারিগরি সহায়তা আমরা চাষিদের দিচ্ছি। দামটা নির্ভর করে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। উৎপাদন ভালো হয়েছে, তবে দামের বিষয়টি কিছুটা হতাশাজনক। কৃষক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য কৃষি বিভাগ তাদের পাশে রয়েছে।”
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে পাবনায় ৩৩ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩৫৩ মেট্রিক টন।
ফলন ভালো হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় চাষিদের মুখে এখন হাসির পরিবর্তে দুশ্চিন্তার ছাপ। তারা আশা করছেন, দ্রুত বাজারে পানের দাম বাড়লে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তারা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ লুৎফর রহমান হীরা
হেড অফিসঃ ১/ জি,আদর্শ ছায়ানীড়, রিংরোড, শ্যামলী, আদাবর ঢাকা - ১২০৭।
স্বত্ব © ২০২৫ চলনবিলের সময়