বাংলা লোকগানের এক নক্ষত্রের পতন হলো। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লোকশিল্পী এবং "লালনকন্যা" হিসেবে পরিচিত ফরিদা পারভীন ৮১ বছর বয়সে মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতীয় সাপ্তাহিক বাংলার মাটি পরিবার এবং জাতীয় জনতা পার্টির সিলেট বিভাগ।
ফরিদা পারভীন, যিনি তার সদা হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তিত্বের জন্য পরিচিত ছিলেন, মূলত লালন সঙ্গীতের মাধ্যমেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তবে নজরুলগীতি এবং দেশাত্মবোধক গান গেয়েও তিনি শ্রোতাদের মন জয় করেছিলেন। তার কণ্ঠের জাদু ছড়িয়ে পড়েছিল "এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা-সুরমা নদীর তটে", "তোমরা ভুলেই গেছো মল্লিকাদির নাম", এবং "বাড়ির কাছে আরশি নগর" এর মতো জনপ্রিয় গানগুলোতে।
১৯৫৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানার শাঔঁল গ্রামে জন্মগ্রহণকারী ফরিদা পারভীন বড় হয়েছেন কুষ্টিয়ায়। মাগুরায় ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে তার গানের হাতেখড়ি হয়। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন ওস্তাদের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, নজরুলগীতি এবং অবশেষে লালন সাঁইজির গানের তালিম নেন। ১৯৭৩ সালে গুরু মোকছেদ আলী সাঁইয়ের কাছে তিনি লালন সঙ্গীতের দীক্ষা গ্রহণ করেন।
সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ফরিদা পারভীন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৮৭ সালের একুশে পদক, ১৯৯৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ছায়াছবির গানে সেরা কণ্ঠদানকারী হিসেবে), এবং ২০০৮ সালের ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচারাল প্রাইজ। এছাড়া তিনি ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদকসহ আরও অনেক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন।
তার প্রয়াণে বাংলা গানের জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। ফরিদা পারভীনের সুর আর গান চিরকাল শ্রোতাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে।
আপনি ফরিদা পারভীনের কোন গানটি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন?
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ লুৎফর রহমান হীরা
হেড অফিসঃ ১/ জি,আদর্শ ছায়ানীড়, রিংরোড, শ্যামলী, আদাবর ঢাকা - ১২০৭।
স্বত্ব © ২০২৫ চলনবিলের সময়