ঢাকা ০৬:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ১৯ Logo চাটমোহরের হান্ডিয়াল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম সবুর মিঞা আর নেই Logo বগুড়ায় “চলনবিলের সময়” পত্রিকার সাংবাদকর্মীদের মাঝে হাসিমুখে পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র প্রদান Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন!
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

রংপুর বিভাগে চাল সংগ্রহ প্রায় শতভাগ, ধানে ব্যর্থ

পরিবর্তন টিভি নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০২:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রংপুর বিভাগে চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায় শতভাগ, তবে  ধান সংগ্রহে  ব্যর্থ  হয়েছে খাদ্য বিভাগ।

চুক্তি অনুযায়ী চাল দিয়েছেন মিলাররা তবে ধানের দাম বাজারে বেশি থাকায় কৃষকরা গোডাউনে ধান দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণেই  ধান সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি বলে জানিয়েছেন রংপুরের খাদ্য বিভাগ।

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আমন ধান ও চাল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। শেষ হওয়ার কথা কাল ২৮ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ ধান সংগ্রহের সময় মাঝে আছে মাত্র এক দিন। কিন্তু সোয়া তিন মাসে রংপুর বিভাগে ধানের সংগ্রহ মাত্র ৭ শতাংশ। শুধু তাই নয়, এক জেলায় এখন পর্যন্ত ১ কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি। ফলে আমন ধান সংগ্রহে পুরো ব্যর্থ খাদ্য বিভাগ। তবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা অনেকটাই ভালো। রংপুর বিভাগের আট জেলায় চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায়  ৮৫ শতাংশ।

কৃষকের মতে, সরকারি দামের চেয়ে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি হওয়ায় কৃষক ও মিলাররা সরকারি গোডাউনে ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এদিকে চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহে ব্যর্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি খাদ্য অধিদপ্তর থেকে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসসূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে বিভাগের আট জেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৪০ টন। এ পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে ৫ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন। সবচেয়ে বেশি নীলফামারীতে ৩৫, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩, লালমনিরহাটে ২, গাইবান্ধায় ৩ ও রংপুরে ১ শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামে সংগ্রহের হার শূন্যের কোঠায়।

রংপুর জেলায় ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৮৬৪ টন। সংগ্রহ হয়েছে ১৬০ টন। গাইবান্ধায় ৮ হাজার ৩৪০ টনের বিপরীতে ২৩০, কুুড়িগ্রামে ৭ হাজার ৯৪৮ টনের বিপরীতে শূন্য, লালমনিরহাটে ৫ হাজার ৬৪৮ টনের বিপরীতে ১১৪, নীলফামারীতে ৭ হাজার ৫৫ টনের বিপরীতে ২ হাজার ৬৪৩, দিনাজপুরে ১৭ হাজার ৯৯১ টনের স্থলে ২ হাজার ২১, ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ হাজার ১৮১ টনের বিপরীতে ৩১৫ ও পঞ্চগড়ে ৭ হাজার ২৯৩ টনের বিপরীতে ১২০ টন সংগ্রহ হয়েছে।

অন্যদিকে আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৬৪ টন। সেখানে এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১৪ হাজার ৬৫৯ টন। শতকরা অর্জন ৮৫ শতাংশ। এ ছাড়া সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৪ টন। সেখানে সংগ্রহ হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৩১২ টন। শতকরা হিসাবে ৯৫ শতাংশ। এ চাল ৩ হাজার ৩১৯ জন মিলারের দেওয়ার কথা রয়েছে।

রংপুরের কৃষক গৌরাঙ্গ রায়, আফজাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, সরকারি দরে ধান বিক্রি করলে তাদের লোকসান হবে। এজন্য তাঁরা আগ্রহী নন। খাদ্য গুদামে যে ধান ৩৩ টাকা কেজি, একই ধান ৩৭-৩৮ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি করতে পারছেন কৃষক। বাজারে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৪৫০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে, যা সরকারি দরের চেয়ে বেশি। সরকারি দরে ধান বিক্রি করলে তাদের লোকসান হবে।

রংপুরের মিলার  শামসুল ইসলাম বাবু বলেন, রংপুর জেলার সব মিলারই দিয়েছে গোডাউনে। আমরা চেষ্টা করেছি সরকারের সহায়তা করার। ধানের দাম ও উর্ধগতি থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে মিলাদের। তারপরও চুক্তি অনুযায়ী মিলারা চাল দিয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম বলেন,  ধান নিয়ে আমাদের তেমন মাথা ব্যথা নেই, কারণ কৃষক যেখানে লাভবান হবে সেখানেই তো বিক্রি করবে, তবে চাল সংগ্রহে যেসব জেলা ব্যর্থ হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহ অভিযান অনেকটাই সফল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রংপুর বিভাগে চাল সংগ্রহ প্রায় শতভাগ, ধানে ব্যর্থ

আপডেট সময় : ০২:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রংপুর বিভাগে চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায় শতভাগ, তবে  ধান সংগ্রহে  ব্যর্থ  হয়েছে খাদ্য বিভাগ।

চুক্তি অনুযায়ী চাল দিয়েছেন মিলাররা তবে ধানের দাম বাজারে বেশি থাকায় কৃষকরা গোডাউনে ধান দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণেই  ধান সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি বলে জানিয়েছেন রংপুরের খাদ্য বিভাগ।

রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আমন ধান ও চাল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয় ১৭ নভেম্বর। শেষ হওয়ার কথা কাল ২৮ ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ ধান সংগ্রহের সময় মাঝে আছে মাত্র এক দিন। কিন্তু সোয়া তিন মাসে রংপুর বিভাগে ধানের সংগ্রহ মাত্র ৭ শতাংশ। শুধু তাই নয়, এক জেলায় এখন পর্যন্ত ১ কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি। ফলে আমন ধান সংগ্রহে পুরো ব্যর্থ খাদ্য বিভাগ। তবে চাল সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা অনেকটাই ভালো। রংপুর বিভাগের আট জেলায় চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায়  ৮৫ শতাংশ।

কৃষকের মতে, সরকারি দামের চেয়ে বাজারে ধান-চালের দাম বেশি হওয়ায় কৃষক ও মিলাররা সরকারি গোডাউনে ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এদিকে চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহে ব্যর্থ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি খাদ্য অধিদপ্তর থেকে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসসূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে বিভাগের আট জেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৪০ টন। এ পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে ৫ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন। সবচেয়ে বেশি নীলফামারীতে ৩৫, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩, লালমনিরহাটে ২, গাইবান্ধায় ৩ ও রংপুরে ১ শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামে সংগ্রহের হার শূন্যের কোঠায়।

রংপুর জেলায় ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৮৬৪ টন। সংগ্রহ হয়েছে ১৬০ টন। গাইবান্ধায় ৮ হাজার ৩৪০ টনের বিপরীতে ২৩০, কুুড়িগ্রামে ৭ হাজার ৯৪৮ টনের বিপরীতে শূন্য, লালমনিরহাটে ৫ হাজার ৬৪৮ টনের বিপরীতে ১১৪, নীলফামারীতে ৭ হাজার ৫৫ টনের বিপরীতে ২ হাজার ৬৪৩, দিনাজপুরে ১৭ হাজার ৯৯১ টনের স্থলে ২ হাজার ২১, ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ হাজার ১৮১ টনের বিপরীতে ৩১৫ ও পঞ্চগড়ে ৭ হাজার ২৯৩ টনের বিপরীতে ১২০ টন সংগ্রহ হয়েছে।

অন্যদিকে আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৬৪ টন। সেখানে এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১৪ হাজার ৬৫৯ টন। শতকরা অর্জন ৮৫ শতাংশ। এ ছাড়া সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৪ টন। সেখানে সংগ্রহ হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৩১২ টন। শতকরা হিসাবে ৯৫ শতাংশ। এ চাল ৩ হাজার ৩১৯ জন মিলারের দেওয়ার কথা রয়েছে।

রংপুরের কৃষক গৌরাঙ্গ রায়, আফজাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জানান, সরকারি দরে ধান বিক্রি করলে তাদের লোকসান হবে। এজন্য তাঁরা আগ্রহী নন। খাদ্য গুদামে যে ধান ৩৩ টাকা কেজি, একই ধান ৩৭-৩৮ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি করতে পারছেন কৃষক। বাজারে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৪৫০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে, যা সরকারি দরের চেয়ে বেশি। সরকারি দরে ধান বিক্রি করলে তাদের লোকসান হবে।

রংপুরের মিলার  শামসুল ইসলাম বাবু বলেন, রংপুর জেলার সব মিলারই দিয়েছে গোডাউনে। আমরা চেষ্টা করেছি সরকারের সহায়তা করার। ধানের দাম ও উর্ধগতি থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে মিলাদের। তারপরও চুক্তি অনুযায়ী মিলারা চাল দিয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম বলেন,  ধান নিয়ে আমাদের তেমন মাথা ব্যথা নেই, কারণ কৃষক যেখানে লাভবান হবে সেখানেই তো বিক্রি করবে, তবে চাল সংগ্রহে যেসব জেলা ব্যর্থ হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহ অভিযান অনেকটাই সফল।