ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন! Logo টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত পাক ব্যাটাররা, মামুলি লক্ষ্য বাংলাদেশের Logo মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় নোবেলের মারামারি, অতঃপর… Logo হাতে পবিত্র কোরআন লিখলেন ৯ বছরের শিশু
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

পথচারীদের কথা ভেবে প্রতিদিন ৩০০ জনের ইফতার আয়োজন করেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ

পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৫:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫ ৭৪ বার পড়া হয়েছে

ইফতার পার্টি ছবি-ptv24

চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পঞ্চগড় মহাসড়কের পাশেই পানি উন্নয়ন বোর্ড জামে মসজিদ। মসজিদের ঠিক বিপরীত পাশে হাসপাতাল, পাশেই আদালত। ফলে এলাকাটি বেশ জন গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থায় সাধারণ রোজাদারদের কথা চিন্তা করে মাসব্যাপী গণইফতারের আয়োজন করেছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। মুসল্লিদের উদ্যোগ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় গত পাঁচ বছর ধরে চলছে এই আয়োজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো গণইফতারের আয়োজন করা হয় মসজিদটিতে। এদিন তিন শতাধিক রোজাদার ইফতারে অংশ নেন। গণইফতার কার্যক্রম শুরু হয় প্রথম রোজার দিন থেকেই।

সদর উপজেলার সাতেমরা এলাকার মুক্তার হোসেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক অসুস্থ্য স্বজনকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন। হাসপাতাল থেকে বের হতে হতে ইফতারের সময় হয়ে যায়। এ নিয়ে যখন মাথায় দুশ্চিন্তা তার, তখন স্বস্তি এনে দেয় এই মসজিদের গণইফতার।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে আদালতে মামলা সংক্রান্ত কাজে এসেছিলেন আব্দুল কুদ্দুস। এদিন তিনিও ইফতার করেন এই মসজিদে। তিনি বলেন, ‘কোর্টের কাজ শেষ হতে একটু দেরি হয়ে গেছে। ভাবছিলাম বাজারে গিয়ে কোন হোটেলে বসে ইফতার করবো, কিন্তু যখন জানলাম এখানেই ইফতারের আয়োজন আছে, তখন এখানেই বসে পড়ি।’ আয়োজনের প্রশংসা করেন তিনি।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, গত পাঁচ বছর ধরে রমজান মাসজুড়ে এই গণইফতারের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় এটি হয়ে আসছে। আয়োজনের মধ্যে থাকে খিচুরি অথবা বিরিয়ানি। এই ইফতারে অংশ নেওয়াদের অধিকাংশই পথচারী, হাসপাতালের রোগীদের স্বজন এবং ভ্যান ও ইজিবাইকের চালক।

সাব্বির আহমেদ নামে এক ইজবাইক চালক বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এখানেই ইফতার করি। আয়োজনটা মোটামুটি উন্নত। আমাদের মতো মানুষের কথা চিন্তা করে যারা এমন মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন আল্লাহ তাদের মনের আশা পূর্ণ করুন।’

স্থানীয় যুবক মো. বাদল বলেন, ‘আমরা গত পাঁচ বছর ধরে এই গণইফতার কর্মসূচি করে আসছি। একক কারো অর্থায়নে নয়, মুসল্লিদের উদ্যোগ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় এটি হচ্ছে। আমাদের আয়োজনের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মুহিবুর রহমান বলেন, ‘আগে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে কেবল আমাদের ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং খাদেমের ইফতারের ব্যবস্থা ছিলো। যখন আমরা বারান্দায় বসে ইফতার করতাম, তখন দেখতাম- হাসপাতালের অনেক রোগীর স্বজন, রিক্সা-ভ্যান চালক এবং অনেক পথচারি মসজিদের ওযু খানায় এসে শুধু পানি খেয়ে ইফতার করতো। এই বিষয়টা দেখে আমাদের খুবই খারাপ লাগে। ফলে মসজিদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এই উদ্যোগ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ জন রোজাদার আমাদের সঙ্গে ইফতার করছে। যাদের  মধ্যে অধিকাংশই গরীব শ্রেণির। বিষয়টি আমাদের খুবই ভালো লাগে। আমরা চাই ব্যাস্ততম এলাকাগুলোর প্রত্যেক মসজিদেই রমজান জুড়ে এমন আয়োজন থাকুক। যেখানে গরীব পথচারিরা পেটপুরে ইফতার করতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

পথচারীদের কথা ভেবে প্রতিদিন ৩০০ জনের ইফতার আয়োজন করেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ

আপডেট সময় : ০৫:৩৫:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

পঞ্চগড় মহাসড়কের পাশেই পানি উন্নয়ন বোর্ড জামে মসজিদ। মসজিদের ঠিক বিপরীত পাশে হাসপাতাল, পাশেই আদালত। ফলে এলাকাটি বেশ জন গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থায় সাধারণ রোজাদারদের কথা চিন্তা করে মাসব্যাপী গণইফতারের আয়োজন করেছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। মুসল্লিদের উদ্যোগ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় গত পাঁচ বছর ধরে চলছে এই আয়োজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনের মতো গণইফতারের আয়োজন করা হয় মসজিদটিতে। এদিন তিন শতাধিক রোজাদার ইফতারে অংশ নেন। গণইফতার কার্যক্রম শুরু হয় প্রথম রোজার দিন থেকেই।

সদর উপজেলার সাতেমরা এলাকার মুক্তার হোসেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক অসুস্থ্য স্বজনকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন। হাসপাতাল থেকে বের হতে হতে ইফতারের সময় হয়ে যায়। এ নিয়ে যখন মাথায় দুশ্চিন্তা তার, তখন স্বস্তি এনে দেয় এই মসজিদের গণইফতার।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে আদালতে মামলা সংক্রান্ত কাজে এসেছিলেন আব্দুল কুদ্দুস। এদিন তিনিও ইফতার করেন এই মসজিদে। তিনি বলেন, ‘কোর্টের কাজ শেষ হতে একটু দেরি হয়ে গেছে। ভাবছিলাম বাজারে গিয়ে কোন হোটেলে বসে ইফতার করবো, কিন্তু যখন জানলাম এখানেই ইফতারের আয়োজন আছে, তখন এখানেই বসে পড়ি।’ আয়োজনের প্রশংসা করেন তিনি।

মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, গত পাঁচ বছর ধরে রমজান মাসজুড়ে এই গণইফতারের আয়োজন করা হয়।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় এটি হয়ে আসছে। আয়োজনের মধ্যে থাকে খিচুরি অথবা বিরিয়ানি। এই ইফতারে অংশ নেওয়াদের অধিকাংশই পথচারী, হাসপাতালের রোগীদের স্বজন এবং ভ্যান ও ইজিবাইকের চালক।

সাব্বির আহমেদ নামে এক ইজবাইক চালক বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এখানেই ইফতার করি। আয়োজনটা মোটামুটি উন্নত। আমাদের মতো মানুষের কথা চিন্তা করে যারা এমন মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন আল্লাহ তাদের মনের আশা পূর্ণ করুন।’

স্থানীয় যুবক মো. বাদল বলেন, ‘আমরা গত পাঁচ বছর ধরে এই গণইফতার কর্মসূচি করে আসছি। একক কারো অর্থায়নে নয়, মুসল্লিদের উদ্যোগ এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় এটি হচ্ছে। আমাদের আয়োজনের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।’

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মুহিবুর রহমান বলেন, ‘আগে মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে কেবল আমাদের ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং খাদেমের ইফতারের ব্যবস্থা ছিলো। যখন আমরা বারান্দায় বসে ইফতার করতাম, তখন দেখতাম- হাসপাতালের অনেক রোগীর স্বজন, রিক্সা-ভ্যান চালক এবং অনেক পথচারি মসজিদের ওযু খানায় এসে শুধু পানি খেয়ে ইফতার করতো। এই বিষয়টা দেখে আমাদের খুবই খারাপ লাগে। ফলে মসজিদ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এই উদ্যোগ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ জন রোজাদার আমাদের সঙ্গে ইফতার করছে। যাদের  মধ্যে অধিকাংশই গরীব শ্রেণির। বিষয়টি আমাদের খুবই ভালো লাগে। আমরা চাই ব্যাস্ততম এলাকাগুলোর প্রত্যেক মসজিদেই রমজান জুড়ে এমন আয়োজন থাকুক। যেখানে গরীব পথচারিরা পেটপুরে ইফতার করতে পারবে।