ঢাকা ০৬:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo চাটমোহরের হান্ডিয়াল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম সবুর মিঞা আর নেই Logo বগুড়ায় “চলনবিলের সময়” পত্রিকার সাংবাদকর্মীদের মাঝে হাসিমুখে পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র প্রদান Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন! Logo টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত পাক ব্যাটাররা, মামুলি লক্ষ্য বাংলাদেশের
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

যশোরে বোরো’র অধিক ফলন, ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক

যশোর জেলা প্রতিনিধি,পরিবর্তন টিভি
  • আপডেট সময় : ০৬:১০:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ৪৯ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জেলায় বোরো ধানের অধিক ফলন হয়েছে। জেলার সর্বত্র মাঠের পর মাঠজুড়ে এখন পাকা ও আধা পাকা ধানের মিষ্টি ঝংকার। আশানুরূপ ফলন হলেও চাষীর মনে এখন বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা। তাই আগেভাগেই ক্ষেত থেকে ধান ঘরে তুলতে এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

ঝড়-বৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে জেলা  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চাষীদের নানারকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ৮০ শতাংশ পাকলেই ধান কেটে ফেলতে বলা হচ্ছে। দ্রুত ধান কাটতে ও মাড়াই করতে রিপার ও হার্ভেস্টার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে মৌসুমী শ্রমিকদের নিয়ে আসারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ২০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ ধান কাটা শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন। তবে কিছু ধান দেরিতে রোপন করায় সেগুলো কাটতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

জেলায় এবার গতবারের চেয়েও তিন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  তথ্য অনুযায়ী, এবার এক লাখ ৬০ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়। এর মধ্যে এক লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাত এবং বাকি জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রয়েছে।

গত মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে।

অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এবার জেলায় উৎপাদিত ধান থেকে ৭ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। এ পরিমান চালের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।
জেলা সদর উপজেলার কৃষক রেজাউল এবার দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেছিলেন। তার জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ গত রোববার শেষ হয়ে গেছে। ধানের ফলনে খুশি রেজাউল বলেন, প্রতি কাঠায় তিনি দেড় মন ধান পেয়েছেন।

বাঘারপাড়ার কৃষক আব্দুর রহমান বোরোর আবাদ করেছেন ৫ বিঘা জমিতে। ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন তিনি। শেষ হতে আরও কয়েকদিন লাগবে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যদি বড় ধরণের ঝড়-বৃষ্টি না হয় এবং বাজারে দাম যদি ভাল থাকে, চাষীরা লাভবান হবেন।

সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক ফসিয়ার রহমান এক বিঘার কিছু বেশি জমিতে বোরোর আবাদ করেন। এই আবাদে তার খরচ হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। ফসিয়ার বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে যে দাম আছে তাতে তিনি ৮০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করতে পারবেন। দাম এর চেয়ে কম হলে লোকসান হবে।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, অনেক ক্ষেত্রে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান, কৃষকদের জলবায়ুর ওপর প্রশিক্ষণ, ধানের বাজারমূল্য বৃদ্ধি, সারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা, আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানের কারণে এবার বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোর জেলায় এবার যে পরিমান ধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে তা থেকে ৭ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। এর বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।

তিনি বলেন, ঝড়-বৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ ধান কেটে ফেলতে হবে। ৮০ ভাগ পাকলেই ধান কেটে ফেলার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ধান কাটতে রিপার ও হার্ভেস্টার ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে মৌসুমী শ্রমিকদের আনতেও বলা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

যশোরে বোরো’র অধিক ফলন, ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক

আপডেট সময় : ০৬:১০:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

জেলায় বোরো ধানের অধিক ফলন হয়েছে। জেলার সর্বত্র মাঠের পর মাঠজুড়ে এখন পাকা ও আধা পাকা ধানের মিষ্টি ঝংকার। আশানুরূপ ফলন হলেও চাষীর মনে এখন বৈশাখী ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা। তাই আগেভাগেই ক্ষেত থেকে ধান ঘরে তুলতে এখন মহাব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

ঝড়-বৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে জেলা  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চাষীদের নানারকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ৮০ শতাংশ পাকলেই ধান কেটে ফেলতে বলা হচ্ছে। দ্রুত ধান কাটতে ও মাড়াই করতে রিপার ও হার্ভেস্টার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে মৌসুমী শ্রমিকদের নিয়ে আসারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ২০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ ধান কাটা শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন। তবে কিছু ধান দেরিতে রোপন করায় সেগুলো কাটতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।

জেলায় এবার গতবারের চেয়েও তিন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  তথ্য অনুযায়ী, এবার এক লাখ ৬০ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়। এর মধ্যে এক লাখ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাত এবং বাকি জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রয়েছে।

গত মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল এক লাখ ৫৭ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে।

অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এবার জেলায় উৎপাদিত ধান থেকে ৭ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। এ পরিমান চালের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।
জেলা সদর উপজেলার কৃষক রেজাউল এবার দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেছিলেন। তার জমির ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ গত রোববার শেষ হয়ে গেছে। ধানের ফলনে খুশি রেজাউল বলেন, প্রতি কাঠায় তিনি দেড় মন ধান পেয়েছেন।

বাঘারপাড়ার কৃষক আব্দুর রহমান বোরোর আবাদ করেছেন ৫ বিঘা জমিতে। ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন তিনি। শেষ হতে আরও কয়েকদিন লাগবে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যদি বড় ধরণের ঝড়-বৃষ্টি না হয় এবং বাজারে দাম যদি ভাল থাকে, চাষীরা লাভবান হবেন।

সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক ফসিয়ার রহমান এক বিঘার কিছু বেশি জমিতে বোরোর আবাদ করেন। এই আবাদে তার খরচ হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। ফসিয়ার বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে যে দাম আছে তাতে তিনি ৮০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করতে পারবেন। দাম এর চেয়ে কম হলে লোকসান হবে।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, অনেক ক্ষেত্রে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান, কৃষকদের জলবায়ুর ওপর প্রশিক্ষণ, ধানের বাজারমূল্য বৃদ্ধি, সারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা, আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানের কারণে এবার বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোর জেলায় এবার যে পরিমান ধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে তা থেকে ৭ লাখ ২৮ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। এর বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।

তিনি বলেন, ঝড়-বৃষ্টির ক্ষতি এড়াতে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ ধান কেটে ফেলতে হবে। ৮০ ভাগ পাকলেই ধান কেটে ফেলার জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ধান কাটতে রিপার ও হার্ভেস্টার ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। প্রয়োজনে অন্য জেলা থেকে মৌসুমী শ্রমিকদের আনতেও বলা হচ্ছে।