ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন! Logo টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত পাক ব্যাটাররা, মামুলি লক্ষ্য বাংলাদেশের Logo মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় নোবেলের মারামারি, অতঃপর… Logo হাতে পবিত্র কোরআন লিখলেন ৯ বছরের শিশু
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক,
  • আপডেট সময় : ০৮:১৪:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এশিয়া মহাদেশ এখন বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হারে উষ্ণ হচ্ছে। এ তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে চরম আবহাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত বিপর্যয় দিন দিন বাড়ছে।

২০২৪ সালের জলবায়ু পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) ‘স্টেট অব দ্য ক্লাইমেট ইন এশিয়া ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সাল ছিল এশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ অথবা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর। এ সময়ে দীর্ঘমেয়াদি তাপপ্রবাহ এবং ভয়াবহ সমুদ্র তাপমাত্রার কারণে এ অঞ্চলের অর্থনীতি, বাস্তুতন্ত্র ও সমাজে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

এশিয়ায় ভূমির পরিমাণ বিশাল এবং তা আর্কটিক পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় উষ্ণতা বৃদ্ধির হারও বেশি। স্থলভাগে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার সাধারণত সমুদ্রের চেয়ে বেশি হয়, ফলে মহাদেশটি দ্বিগুণ হারে উত্তপ্ত হচ্ছে।

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

২০২৪ সালে এশিয়ার সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ছিল রেকর্ড পরিমাণ। এ সময় সমুদ্রপৃষ্ঠ প্রতি দশকে ০.২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে বেড়েছে, যা বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ। বিশেষ করে উত্তর ভারত মহাসাগর ও পূর্ব চীন সাগরসহ সমুদ্রের বিস্তীর্ণ অংশে এই উষ্ণতা লক্ষ করা গেছে। এতে উপকূলীয় নিচু এলাকাগুলো ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

হিমালয় ও তিব্বত মালভূমি ঘিরে থাকা হাই-মাউন্টেন এশিয়া অঞ্চলে ২০২৩-২৪ সালে ২৪টির মধ্যে ২৩টি হিমবাহে বরফ কমেছে। শীতকালে তুষারপাত কম হওয়া এবং গ্রীষ্মে চরম গরমের কারণে বরফ গলার হার বেড়েছে। এই অঞ্চলকে ‘বিশ্বের তৃতীয় মেরু’ বলা হয়, যেখানে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম মিঠা পানির হিমবাহ (পোলার অঞ্চল বাদে)। হিমবাহ গলা শুধু সমুদ্রপৃষ্ঠ বাড়ায় না, বরং তা আঞ্চলিক জলচক্র, কৃষি ও গ্লেসিয়াল লেক বিস্ফোরণের মতো বিপদও ডেকে আনে।

 

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

২০২৪ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সমুদ্রের প্রায় ১৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার অংশ চরম সামুদ্রিক তাপপ্রবাহে আক্রান্ত হয়। এই পরিমাণ পুরো পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের এক দশমাংশের সমান। এই সময় উত্তর মেরু মহাসাগরের বড় অংশে বরফ গলে গিয়ে বরফ রেখা উত্তর দিকে সরে গেছে।

খরা ও অতিবৃষ্টির মধ্য দিয়ে চলে গেছে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল। রাশিয়ার লাপতেভ সাগর, লেনা নদীর আশেপাশে এবং আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে, কাজাখস্তান ও দক্ষিণ রাশিয়ায় ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে অন্তত ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়।

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৪ ঘণ্টায় ২৫৯.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, যা ১৯৪৯ সালের পর সর্বোচ্চ। চরম বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড় অনেক দেশে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিব সেলেস্টে সাওলো বলেন,

চরম আবহাওয়া ইতোমধ্যে সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। জীবন ও জীবিকা রক্ষায় জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ এখন আরও বেশি জরুরি।

প্রতিবেদনে নেপালের একটি উদাহরণ তুলে ধরা হয়, যেখানে আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি থেকে সাধারণ মানুষ নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছে। এটি প্রমাণ করে, সময়মতো ব্যবস্থা নিলে বিপর্যয়ের প্রভাব অনেকটাই কমানো সম্ভব।

তথ্যসূত্র: ডন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

আপডেট সময় : ০৮:১৪:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

এশিয়া মহাদেশ এখন বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হারে উষ্ণ হচ্ছে। এ তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে চরম আবহাওয়া, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশগত বিপর্যয় দিন দিন বাড়ছে।

২০২৪ সালের জলবায়ু পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) ‘স্টেট অব দ্য ক্লাইমেট ইন এশিয়া ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সাল ছিল এশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ অথবা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর। এ সময়ে দীর্ঘমেয়াদি তাপপ্রবাহ এবং ভয়াবহ সমুদ্র তাপমাত্রার কারণে এ অঞ্চলের অর্থনীতি, বাস্তুতন্ত্র ও সমাজে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

এশিয়ায় ভূমির পরিমাণ বিশাল এবং তা আর্কটিক পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় উষ্ণতা বৃদ্ধির হারও বেশি। স্থলভাগে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার সাধারণত সমুদ্রের চেয়ে বেশি হয়, ফলে মহাদেশটি দ্বিগুণ হারে উত্তপ্ত হচ্ছে।

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

২০২৪ সালে এশিয়ার সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ছিল রেকর্ড পরিমাণ। এ সময় সমুদ্রপৃষ্ঠ প্রতি দশকে ০.২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে বেড়েছে, যা বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ। বিশেষ করে উত্তর ভারত মহাসাগর ও পূর্ব চীন সাগরসহ সমুদ্রের বিস্তীর্ণ অংশে এই উষ্ণতা লক্ষ করা গেছে। এতে উপকূলীয় নিচু এলাকাগুলো ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

হিমালয় ও তিব্বত মালভূমি ঘিরে থাকা হাই-মাউন্টেন এশিয়া অঞ্চলে ২০২৩-২৪ সালে ২৪টির মধ্যে ২৩টি হিমবাহে বরফ কমেছে। শীতকালে তুষারপাত কম হওয়া এবং গ্রীষ্মে চরম গরমের কারণে বরফ গলার হার বেড়েছে। এই অঞ্চলকে ‘বিশ্বের তৃতীয় মেরু’ বলা হয়, যেখানে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম মিঠা পানির হিমবাহ (পোলার অঞ্চল বাদে)। হিমবাহ গলা শুধু সমুদ্রপৃষ্ঠ বাড়ায় না, বরং তা আঞ্চলিক জলচক্র, কৃষি ও গ্লেসিয়াল লেক বিস্ফোরণের মতো বিপদও ডেকে আনে।

 

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

২০২৪ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সমুদ্রের প্রায় ১৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার অংশ চরম সামুদ্রিক তাপপ্রবাহে আক্রান্ত হয়। এই পরিমাণ পুরো পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের এক দশমাংশের সমান। এই সময় উত্তর মেরু মহাসাগরের বড় অংশে বরফ গলে গিয়ে বরফ রেখা উত্তর দিকে সরে গেছে।

খরা ও অতিবৃষ্টির মধ্য দিয়ে চলে গেছে এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল। রাশিয়ার লাপতেভ সাগর, লেনা নদীর আশেপাশে এবং আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে, কাজাখস্তান ও দক্ষিণ রাশিয়ায় ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে অন্তত ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়।

এশিয়ায় বাড়ছে উত্তাপ, হুমকির মুখে মানুষ-প্রকৃতি

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৪ ঘণ্টায় ২৫৯.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, যা ১৯৪৯ সালের পর সর্বোচ্চ। চরম বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড় অনেক দেশে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিব সেলেস্টে সাওলো বলেন,

চরম আবহাওয়া ইতোমধ্যে সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। জীবন ও জীবিকা রক্ষায় জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ এখন আরও বেশি জরুরি।

প্রতিবেদনে নেপালের একটি উদাহরণ তুলে ধরা হয়, যেখানে আগাম সতর্কতা ও প্রস্তুতির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি থেকে সাধারণ মানুষ নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছে। এটি প্রমাণ করে, সময়মতো ব্যবস্থা নিলে বিপর্যয়ের প্রভাব অনেকটাই কমানো সম্ভব।

তথ্যসূত্র: ডন