ঢাকা ০৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন! Logo টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত পাক ব্যাটাররা, মামুলি লক্ষ্য বাংলাদেশের Logo মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় নোবেলের মারামারি, অতঃপর… Logo হাতে পবিত্র কোরআন লিখলেন ৯ বছরের শিশু
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

ব্রিটিশদের নাকানিচুবানি দিতে ১০ বছর ধরে যে রণকৌশলে এগোচ্ছে ইরান

আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক,
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ ১৩ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাজ্যের ভেতরে ইরান একটি গোপন ‘ছায়া যুদ্ধ’ চালাচ্ছে। আর এই ছায়া যুদ্ধ শুধু তেহরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে অকার্যকর করার প্রচেষ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর পরিধি আরও বিস্তৃত। ইরান প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করছে এবং সমাজের মধ্যে বিভাজন তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে- এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ।

সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি ৯টি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করছে, তবে এই লঙ্ঘনগুলো ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রভাব ও আর্থিক তৎপরতার একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।

দ্য টেলিগ্রাফের মতে, ইরানের এই দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের লক্ষ্য হলো পশ্চিমা শত্রুরাষ্ট্রগুলোর ভিতরে বিভাজন তৈরি করা এবং যুক্তরাষ্ট্রঘনিষ্ঠ দেশগুলোর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করা।

প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি এক সময় যুক্তরাজ্যে সম্প্রচারের অনুমতি পেলেও ২০১২ সালে তা বাতিল হয়। তবুও তারা এখনো অনলাইনে ইরানঘেঁষা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

ইসলামিক হিউম্যান রাইট কমিশন (আইএইচআরসি)-এর মতো কিছু লন্ডনভিত্তিক সংগঠনের কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এই সংগঠনগুলো ‘কুদ্স ডে’ আয়োজন করে এবং পূর্বে হিজবুল্লাহর প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে। পরে হিজবুল্লাহকে যুক্তরাজ্য সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

এছাড়া নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ইরানের দুটি রাষ্ট্রীয় ব্যাংক- মেলি ব্যাংক ও ব্যাংক সাদেরাত এখনও লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এগুলোর সঙ্গে পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অর্থায়নের যোগসূত্র পাওয়া গেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

দ্য টাইমস এবং স্কটিশ ডেইলি এক্সপ্রেস-এর তথ্যমতে, ওপেন এআই সম্প্রতি স্টর্ম-২০৩৫ নামের একটি নেটওয়ার্ক শনাক্ত করেছে, যা সম্ভবত ইরানের সঙ্গে যুক্ত। এই নেটওয়ার্ক ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় বিভেদমূলক পোস্ট তৈরি করতে পারসিয়ান ভাষার প্রম্পট ব্যবহার করত।

এই পোস্টগুলো এক্স-এ এমন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত হতো, যারা নিজেদের স্থানীয় ব্রিটিশ ব্যবহারকারী হিসেবে পরিচয় দিত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলো ছিল ভুয়া অ্যাকাউন্ট। ভুয়া পরিচয়ে এগুলো তৈরি করা হতো এবং স্টক ছবি ব্যবহার করত।

গবেষণা বলছে, এই প্রচারণার লক্ষ্য ছিল স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা আন্দোলন, ব্যয় সংকোচন নীতি এবং বিদেশনীতি সংক্রান্ত স্পর্শকাতর ইস্যুতে মতবিরোধকে উসকে দেওয়া।

ইসরায়েলি হামলার পর ১২ জুন এসব অ্যাকাউন্ট হঠাৎ করে নিশ্চুপ হয়ে যায়, যা ইঙ্গিত দেয় যে এগুলো ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) সাথে যুক্ত থাকতে পারে।

দ্য টেলিগ্রাফের মতে, ইরানের এই জটিল প্রভাব-অভিযান মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য সরকার এখনো কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের পর বছর ধরে নীতিনির্ধারকদের উদাসীনতার সুযোগে ইরান এই ধরনের তৎপরতা গড়ে তুলেছে এবং এখন তার প্রভাব বিস্তার ঘটাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ব্রিটিশদের নাকানিচুবানি দিতে ১০ বছর ধরে যে রণকৌশলে এগোচ্ছে ইরান

আপডেট সময় : ০৮:০৫:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাজ্যের ভেতরে ইরান একটি গোপন ‘ছায়া যুদ্ধ’ চালাচ্ছে। আর এই ছায়া যুদ্ধ শুধু তেহরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে অকার্যকর করার প্রচেষ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর পরিধি আরও বিস্তৃত। ইরান প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করছে এবং সমাজের মধ্যে বিভাজন তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে- এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ।

সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি ৯টি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করছে, তবে এই লঙ্ঘনগুলো ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রভাব ও আর্থিক তৎপরতার একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।

দ্য টেলিগ্রাফের মতে, ইরানের এই দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের লক্ষ্য হলো পশ্চিমা শত্রুরাষ্ট্রগুলোর ভিতরে বিভাজন তৈরি করা এবং যুক্তরাষ্ট্রঘনিষ্ঠ দেশগুলোর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করা।

প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভি এক সময় যুক্তরাজ্যে সম্প্রচারের অনুমতি পেলেও ২০১২ সালে তা বাতিল হয়। তবুও তারা এখনো অনলাইনে ইরানঘেঁষা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

ইসলামিক হিউম্যান রাইট কমিশন (আইএইচআরসি)-এর মতো কিছু লন্ডনভিত্তিক সংগঠনের কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এই সংগঠনগুলো ‘কুদ্স ডে’ আয়োজন করে এবং পূর্বে হিজবুল্লাহর প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে। পরে হিজবুল্লাহকে যুক্তরাজ্য সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

এছাড়া নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ইরানের দুটি রাষ্ট্রীয় ব্যাংক- মেলি ব্যাংক ও ব্যাংক সাদেরাত এখনও লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে কার্যক্রম চালাচ্ছে। এগুলোর সঙ্গে পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অর্থায়নের যোগসূত্র পাওয়া গেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

দ্য টাইমস এবং স্কটিশ ডেইলি এক্সপ্রেস-এর তথ্যমতে, ওপেন এআই সম্প্রতি স্টর্ম-২০৩৫ নামের একটি নেটওয়ার্ক শনাক্ত করেছে, যা সম্ভবত ইরানের সঙ্গে যুক্ত। এই নেটওয়ার্ক ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় বিভেদমূলক পোস্ট তৈরি করতে পারসিয়ান ভাষার প্রম্পট ব্যবহার করত।

এই পোস্টগুলো এক্স-এ এমন অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশিত হতো, যারা নিজেদের স্থানীয় ব্রিটিশ ব্যবহারকারী হিসেবে পরিচয় দিত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এগুলো ছিল ভুয়া অ্যাকাউন্ট। ভুয়া পরিচয়ে এগুলো তৈরি করা হতো এবং স্টক ছবি ব্যবহার করত।

গবেষণা বলছে, এই প্রচারণার লক্ষ্য ছিল স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা আন্দোলন, ব্যয় সংকোচন নীতি এবং বিদেশনীতি সংক্রান্ত স্পর্শকাতর ইস্যুতে মতবিরোধকে উসকে দেওয়া।

ইসরায়েলি হামলার পর ১২ জুন এসব অ্যাকাউন্ট হঠাৎ করে নিশ্চুপ হয়ে যায়, যা ইঙ্গিত দেয় যে এগুলো ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) সাথে যুক্ত থাকতে পারে।

দ্য টেলিগ্রাফের মতে, ইরানের এই জটিল প্রভাব-অভিযান মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য সরকার এখনো কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের পর বছর ধরে নীতিনির্ধারকদের উদাসীনতার সুযোগে ইরান এই ধরনের তৎপরতা গড়ে তুলেছে এবং এখন তার প্রভাব বিস্তার ঘটাচ্ছে।