কলাবাগান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ফিকামলি তত্ত্বের জনক, শিক্ষাবিদ ড. আব্দুল ওয়াদুদ। সাজানো অভিযান চালিয়ে কোটি টাকা চাঁদা দাবি ও ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে বুধবার (০২ জুলাই) ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেছেন তিনি। আদালতের বিচারক সিফাত উল্লাহ মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে মামলার শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মেজর (অব.) এম সরোয়ার হোসেন। তিনি জানান, মামলায় কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন ও কলাবাগান থানা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আব্দুল মান্নান ভূইয়া। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৪৭/৪৪৮/৩৮৫/৩৮৬/৩৮৭/৩৯৩/১৪৯/১০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৯ এপ্রিল গভীর রাতে কলাবাগান থানার পুলিশের সহযোগিতায় একদল সন্ত্রাসী ড. আব্দুল ওয়াদুদের বাড়িতে জোরপূর্বক ঢুকে পড়ে। পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে ও ২ লাখ টাকা নিয়ে যায়। বাদবাকি টাকা দিতে না পারলে দশটি মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, সন্ত্রাসীরা পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ির বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়। বিশেষ করে গবেষণার জন্য সংগ্রহ করা ২০ জোড়া দুর্লভ পাখি নিয়ে যায়, যার আনুমানিক মূল্য আড়াই কোটি টাকা। বহিরাগতরা ঢুকে হরিণ ধরার চেষ্টা করলে একটি গর্ভবতী হরিণ মারা যায়।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী আব্দুল ওয়াদুদ ডিএমপি কমিশনারের কাছে ওসিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। অভিযোগ দেওয়ার পরপরই ওসি মোক্তারুজ্জামান ও এসআই বেলাল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং একটি তদন্ত কমিটি হয়।
সম্প্রতি তদন্ত কমিটি কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে এসআই বেলাল হোসেনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর ওসির বিষয়ে বলা হয়েছে, ঘটনার পারিপার্শ্বিক বিষয় বিবেচনায় তৎকালীন ওসি মোক্তারুজ্জামান ঘটনার সময় থানায় উপস্থিত না থেকে উত্তরার বাসায় গমন করে (সিডিআর পর্যালোচনায়) তিনি দায়িত্বহীতার পরিচয় দিয়েছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর ভুক্তভোগী দাবি করেন, এই তদন্ত প্রতিবেদন একপেশে এবং ওসিকে বাঁচানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় আদালতে ওসিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে।
আব্দুল ওয়াদুদের আইনজীবী ব্যরিস্টার এম সরোয়ার হোসেন বলেন, কোনো মামলা-মোকদ্দমা না থাকা সত্ত্বেও, কোন ওয়ারেন্ট,অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও গভীর রাতে যে কোনো নাগরিকের কাছে গিয়ে পুলিশের চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ কেন সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি বাড়িতে ঢুকবে? পুলিশ জনগণের জান-মালের রক্ষক। অসাধু কিছু সদস্য রক্ষক না হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে, যা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতকারী পুলিশ সদস্যদের কারণে মানুষের জান-মাল বর্তমানে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, গত ২৯ এপ্রিল কলাবাগান থানার তৎকালীন ওসি ও কিছু সদস্য তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে জান, মাল ও সম্পত্তি রক্ষা না করে ডাকাতদের সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ লুৎফর রহমান হীরা
ঢাকা অফিস: ১/জি,আদর্শ ছায়ানীড়,রিংরোড,শ্যামলী,আদাবর ঢাকা-১২০৭।
©2025 l চলনবিলের সময়