ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

কাঁচা মরিচের কেজি ২৫০ টাকা

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ ৪৭ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা বর্ষায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে এক দিনের ব্যবধানে মরিচের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। এক দিন আগে যে বিন্দু মরিচ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। একদিন পরেই তার দাম বেড়ে হয়েছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা।

এ ছাড়াও কারেন্ট জাতের মরিচ বিক্রি হতো ১৫০ টাকা কেজি। সেই মরিচ একদিন পরেই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। আর এক সপ্তাহ আগে এই মরিচের দাম ছিল ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। যা সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা বর্ষণের ফলে মরিচ ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেতের মরিচ গাছ মরে গেছে। এ ছাড়াও যে সব মরিচ ক্ষেতে মরিচ আছে সেগুলোও বৃষ্টির জন্য তুলতে পারছেন না। এতে করে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার কয়েক হাজার মরিচ চাষিরা। বাজারে মরিচের আমদানি কম হওয়ায় মরিচের দামও বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।

উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোড়াইল গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া জানান, আমি এ বছর তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। মরিচের ফলন অনেক ভালো ছিল। দামও অনেক ভালো পেয়েছি। মৌসুমের মাঝামাঝিতে একবার বৃষ্টি হওয়ায় নিচু অঞ্চলের অনেক জমিতে পানি জমে মরিচ গাছ মরে গেছে। কিন্তু আমাদের জমিটা উঁচু হওয়ায় বৃষ্টিতে তখন পানি জমেনি। ফলে গাছগুলো অনেক ভালো ছিল এবং ফলনও ছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ায় আমরা মরিচ তুলতে পারছি না। মরিচ না তুলতে পারার কারণে অনেক মরিচ পেকে যাচ্ছে এবং জমিতে তা ঝরে পরছে। এ ছাড়াও মরিচের নতুন ফুলও আর আসছে না। বৃষ্টিতে পানি জমে মরিচ গাছও মরে যাচ্ছে।

ঝিটকা বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাবুল হোসেন জানান, বুধবার (৯ জুলাই) আমরা বিন্দু মরিচ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কিনেছি এবং কারেন্ট মরিচ ১৫০ টাকা করে কিনেছি। কিন্তু সেই মরিচ আজ ২১০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। আর কারেন্ট মরিচ ২৫০ টাকা করে কিনতে হয়েছে। এর কারণ বর্তমানে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী মরিচ সরবরাহ হচ্ছে না। যার ফলে মরিচের দাম তুলনামূলক অনেকটাই বেড়ে গেছে। মরিচের আমদানি বৃদ্ধি পেলে হয়তো আবারও মরিচের দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বিভিন্ন জাতের মরিচ চাষ হয়েছে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান কালবেলাকে বলেন, অনেক আগে থেকেই এ উপজেলা মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। আবাদও অনেক ভালো হয়। ফলে দিনে দিনে মরিচের আবাদও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে মরিচ চাষের জমিগুলো নিচু এলাকা হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে সহজেই পানি উঠে যায়। এতে অনেক জমির মরিচ গাছ নষ্টও হয়ে গেছে ৷ কিন্তু যেসব জমিতে পানি ওঠেনি বৈরী আবহাওয়ায় টানা বৃষ্টির কারণে কৃষকরা জমি থেকে মরিচ সংগ্রহ করতে পারছে না। এর ফলে বাজারে মরিচ সরবরাহ অনেকটাই কমে গেছে। যার কারণে বাজারে মরিচের দামও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। মরিচের সরবরাহ বাড়লে হয়তো দাম আবার কমে আসবে। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকের খোঁজখবর রাখছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

কাঁচা মরিচের কেজি ২৫০ টাকা

আপডেট সময় : ০৩:৪৫:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

টানা বর্ষায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে এক দিনের ব্যবধানে মরিচের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। এক দিন আগে যে বিন্দু মরিচ বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। একদিন পরেই তার দাম বেড়ে হয়েছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা।

এ ছাড়াও কারেন্ট জাতের মরিচ বিক্রি হতো ১৫০ টাকা কেজি। সেই মরিচ একদিন পরেই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। আর এক সপ্তাহ আগে এই মরিচের দাম ছিল ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। যা সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা বর্ষণের ফলে মরিচ ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেতের মরিচ গাছ মরে গেছে। এ ছাড়াও যে সব মরিচ ক্ষেতে মরিচ আছে সেগুলোও বৃষ্টির জন্য তুলতে পারছেন না। এতে করে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার কয়েক হাজার মরিচ চাষিরা। বাজারে মরিচের আমদানি কম হওয়ায় মরিচের দামও বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।

উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ গোড়াইল গ্রামের ইব্রাহিম মিয়া জানান, আমি এ বছর তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। মরিচের ফলন অনেক ভালো ছিল। দামও অনেক ভালো পেয়েছি। মৌসুমের মাঝামাঝিতে একবার বৃষ্টি হওয়ায় নিচু অঞ্চলের অনেক জমিতে পানি জমে মরিচ গাছ মরে গেছে। কিন্তু আমাদের জমিটা উঁচু হওয়ায় বৃষ্টিতে তখন পানি জমেনি। ফলে গাছগুলো অনেক ভালো ছিল এবং ফলনও ছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ায় আমরা মরিচ তুলতে পারছি না। মরিচ না তুলতে পারার কারণে অনেক মরিচ পেকে যাচ্ছে এবং জমিতে তা ঝরে পরছে। এ ছাড়াও মরিচের নতুন ফুলও আর আসছে না। বৃষ্টিতে পানি জমে মরিচ গাছও মরে যাচ্ছে।

ঝিটকা বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাবুল হোসেন জানান, বুধবার (৯ জুলাই) আমরা বিন্দু মরিচ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কিনেছি এবং কারেন্ট মরিচ ১৫০ টাকা করে কিনেছি। কিন্তু সেই মরিচ আজ ২১০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে। আর কারেন্ট মরিচ ২৫০ টাকা করে কিনতে হয়েছে। এর কারণ বর্তমানে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী মরিচ সরবরাহ হচ্ছে না। যার ফলে মরিচের দাম তুলনামূলক অনেকটাই বেড়ে গেছে। মরিচের আমদানি বৃদ্ধি পেলে হয়তো আবারও মরিচের দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বিভিন্ন জাতের মরিচ চাষ হয়েছে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান কালবেলাকে বলেন, অনেক আগে থেকেই এ উপজেলা মরিচ চাষের জন্য বিখ্যাত। আবাদও অনেক ভালো হয়। ফলে দিনে দিনে মরিচের আবাদও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে মরিচ চাষের জমিগুলো নিচু এলাকা হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে সহজেই পানি উঠে যায়। এতে অনেক জমির মরিচ গাছ নষ্টও হয়ে গেছে ৷ কিন্তু যেসব জমিতে পানি ওঠেনি বৈরী আবহাওয়ায় টানা বৃষ্টির কারণে কৃষকরা জমি থেকে মরিচ সংগ্রহ করতে পারছে না। এর ফলে বাজারে মরিচ সরবরাহ অনেকটাই কমে গেছে। যার কারণে বাজারে মরিচের দামও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। মরিচের সরবরাহ বাড়লে হয়তো দাম আবার কমে আসবে। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকের খোঁজখবর রাখছি।