নেত্রকোনার আটপাড়ায় অভিযানের নামে জুয়ার আসর থেকে আসামির সঙ্গে থাকা লাখ টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে আটপাড়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের থেকে প্রায় লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও পরদিন তাদের ১ হাজার ৪৯০ টাকা উদ্ধার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে এ ঘটনায় হায়দার মিয়া নামে এক ভুক্তভোগী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত রোববার তাস খেলার সময় হঠাৎ হাজির হন এসআই আল মামুন, এএসআই মশিউর রহমান সুজনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। জুয়া খেলার অভিযোগে তাদের পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আটকরা হলেন—উপজেলার যোগিরনগুয়া গ্রামের আ. কাশেম (৫০), অলি (৪০), আটাশিয়া গ্রামের জজ মিয়া (৪০), মো. হায়দার মিয়া (৪৮) ও মহেশ্বরখিলা গ্রামের মো. সাফায়েত হোসেন (২৮)।
ভুক্তভোগী হায়দার মিয়া বলেন, আমার কাছে খেলার সময় ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা ছিল। পুলিশ আমাকে আটক করার সময় সেই টাকা নিয়ে নেয়, অথচ তালিকায় দেখায় মাত্র ১ হাজার ৪৯০ টাকা। আমি অভিযোগ জানালে উল্টো পুলিশ বাড়িতে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে যায়। বলে, ‘সাংবাদিকরা তাদের কিছু করতে পারবে না, আমাকে এর মজা দেখিয়ে ছাড়বে।’
ভুক্তভোগী সাফায়েত হোসেন বলেন, আমার কাছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা ছিল। পুলিশ ভিডিও করার আগে সেটা পকেটে ঢুকিয়ে নেয়। বলে, যদি বলি আমার কাছে টাকা ছিল, তাহলে বড় মামলায় ঢুকিয়ে দেবে। আমরা পুলিশের রোষানলে পড়তে চাই না।
এদিকে মামলার সাক্ষী নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সাক্ষী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। পুলিশ ডেকে তুলে কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। কী হয়েছিল, আমি কিছুই জানি না।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সরল মিয়া বলেন, পুলিশ যখন অভিযান চালায়, তখন এলাকাবাসীর কেউ ঘটনাস্থলে ছিল না। বাইরে থেকে ভেতরে কী হয়েছে, তা কেউ জানতে পারেনি।
এ বিষয়ে এসআই আল মামুন বলেন, টাকা আত্মসাতের বিষয়টি মিথ্যা। তাদের কাছে যা পেয়েছি তা-ই উদ্ধার দেখানো হয়েছে।
আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুজ্জামান বলেন, অফিসাররা ঘটনাস্থলে যা পেয়েছে তাই দিয়ে চালান দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার মীর্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, বিষয়টি অবহিত হয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা মিললে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর অভিযোগ মিথ্যা হলে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ লুৎফর রহমান হীরা
ঢাকা অফিস: ১/জি,আদর্শ ছায়ানীড়,রিংরোড,শ্যামলী,আদাবর ঢাকা-১২০৭।
©2025 l চলনবিলের সময়