ঢাকা ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

নাক ডাকার সমস্যায় ভুগছেন? জেনে নিন সমাধান

চলনবিলের সময় নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৩:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫ ১৩ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নাক ডাকা অনেক মানুষের জন্য একটি সাধারণ ব্যাপার। এটি মাঝে মধ্যে অন্যদের জন্য ছোট একটা বিরক্তির কারণ হলেও, কখনো কখনো এটি স্বাস্থ্যগত বড় সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। কেন মানুষ নাক ডাকে এবং এর সমাধানে কী করা যায়, সেটা জানা ঘুমের মান উন্নত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ঘুমের সময় যখন নাক বা মুখ দিয়ে বাতাস যাওয়ার পথ আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, তখন আশপাশের টিস্যুগুলো কাঁপে। সেই কেঁপে ওঠা থেকেই নাক ডাকার শব্দ হয়। অনেক কারণে এমনটা হতে পারে। চলুন জেনে নেই কী কী কারণে এমন হতে পারে।

নাক বন্ধ থাকা : সর্দি, অ্যালার্জি বা নাকের হাড় বাঁকা থাকলে ঠিকমতো শ্বাস নেওয়া যায় না। এতে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়, আর তাতেই নাক ডাকার প্রবণতা বেড়ে যায় অনেকের।

গলার ও জিভের পেশি ঢিলে হয়ে যাওয়া : অনেক সময় ঘুম গভীর হলে, বা মদ্যপান বা ঘুমের ওষুধ খেলে গলার পেশি খুব ঢিলে হয়ে যায়। তখন শ্বাসনালি কিছুটা বন্ধ হয়ে যায় এবং শব্দ হয়।

অতিরিক্ত ওজন : ঘাড়ে বা গলায় চর্বি বেশি থাকলে শ্বাসনালির ওপর চাপ পড়ে, ফলে বাতাস ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। অনেক সময় এ কারণেও নাক ডাকার সমস্যা দেখা যায়।

চিত হয়ে ঘুমানো : পিঠের ওপর শুয়ে ঘুমালে অনেক ক্ষেত্রে জিভ পেছনে চলে যায় ও গলা বন্ধ হয়ে যায়। এতেও নাক ডাকার সমস্যা বাড়ে।

বয়স বাড়া : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গলার পেশি দুর্বল হয় ও শ্বাসনালি সরু হয়ে যায়, ফলে অনেকের ক্ষেত্রে নাক ডাকা বাড়ে।

কখন নাক ডাকা চিন্তার বিষয়

মাঝে মধ্যে নাক ডাকা সাধারণ ব্যাপার, এতে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু যদি প্রতিদিন উচ্চ শব্দে নাক ডাকেন, ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যায় বা শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে তবে সেটা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া নামক ঘুমের রোগের লক্ষণ হতে পারে।

এ রোগে ঘুমের সময় বারবার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, ফলে শরীর ঠিকমতো অক্সিজেন পায় না এবং দিনভর ক্লান্তি থাকে। এ ছাড়া মাথাব্যথা বা মনোযোগের ঘাটতিও দেখা দেয়।

তাই আপনার নাক ডাকার সমস্যাটি যদি প্রতিদিনের সমস্যা হয়ে থাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

নাক ডাকা কমাতে বা বন্ধ করতে কী করা যায়?

নাক ডাকা কমানোর বেশ কিছু উপায় আছে। যেমন:

নাক ডাকার সমস্যায় ভুগছেন? জেনে নিন সমাধান

১. দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন

– ওজন কমানো

– রাতে মদ্যপান বা ঘুমের ওষুধ না খাওয়া

– পাশ ফিরে ঘুমানো

– প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো ও জাগা

– পর্যাপ্ত পানি পান করা

২. ঘুমের পরিবেশ ঠিক রাখা

– ঘরে যেন ধুলাবালি না থাকে, অ্যালার্জি যেন না হয়

– শুষ্ক বাতাস থাকলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা

৩. নাক বন্ধ থাকলে তার চিকিৎসা

– নাকের স্প্রে, নাক পরিষ্কারের জন্য স্যালাইন ব্যবহার

– যদি নাকের হাড় বাঁকা থাকে, তাহলে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন

৪. চিকিৎসা পদ্ধতি

– যদি স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকে, তাহলে বিশেষ মেশিন ব্যবহার করতে হয় যেটা শ্বাস নিতে সাহায্য করে

– কিছু ডেন্টাল যন্ত্র আছে, যা জিভ বা চোয়াল ঠিক অবস্থানে রাখতে সাহায্য করে

– কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করা লাগে, বিশেষ করে যদি শ্বাসনালি খুব বেশি সরু হয়ে যায়

নাক ডাকা অনেকের কাছে তেমন কিছু না মনে হলেও, এটি একবার ভালোভাবে বুঝে দেখা উচিত। কারণ এটি আপনার ঘুম, শরীরের বিশ্রাম এবং সুস্থতার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। সহজ কিছু অভ্যাস বদলেই অনেক ক্ষেত্রে নাক ডাকা কমে যায়। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

নাক ডাকার সমস্যায় ভুগছেন? জেনে নিন সমাধান

আপডেট সময় : ০৩:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

নাক ডাকা অনেক মানুষের জন্য একটি সাধারণ ব্যাপার। এটি মাঝে মধ্যে অন্যদের জন্য ছোট একটা বিরক্তির কারণ হলেও, কখনো কখনো এটি স্বাস্থ্যগত বড় সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে। কেন মানুষ নাক ডাকে এবং এর সমাধানে কী করা যায়, সেটা জানা ঘুমের মান উন্নত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ঘুমের সময় যখন নাক বা মুখ দিয়ে বাতাস যাওয়ার পথ আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়, তখন আশপাশের টিস্যুগুলো কাঁপে। সেই কেঁপে ওঠা থেকেই নাক ডাকার শব্দ হয়। অনেক কারণে এমনটা হতে পারে। চলুন জেনে নেই কী কী কারণে এমন হতে পারে।

নাক বন্ধ থাকা : সর্দি, অ্যালার্জি বা নাকের হাড় বাঁকা থাকলে ঠিকমতো শ্বাস নেওয়া যায় না। এতে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়, আর তাতেই নাক ডাকার প্রবণতা বেড়ে যায় অনেকের।

গলার ও জিভের পেশি ঢিলে হয়ে যাওয়া : অনেক সময় ঘুম গভীর হলে, বা মদ্যপান বা ঘুমের ওষুধ খেলে গলার পেশি খুব ঢিলে হয়ে যায়। তখন শ্বাসনালি কিছুটা বন্ধ হয়ে যায় এবং শব্দ হয়।

অতিরিক্ত ওজন : ঘাড়ে বা গলায় চর্বি বেশি থাকলে শ্বাসনালির ওপর চাপ পড়ে, ফলে বাতাস ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। অনেক সময় এ কারণেও নাক ডাকার সমস্যা দেখা যায়।

চিত হয়ে ঘুমানো : পিঠের ওপর শুয়ে ঘুমালে অনেক ক্ষেত্রে জিভ পেছনে চলে যায় ও গলা বন্ধ হয়ে যায়। এতেও নাক ডাকার সমস্যা বাড়ে।

বয়স বাড়া : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গলার পেশি দুর্বল হয় ও শ্বাসনালি সরু হয়ে যায়, ফলে অনেকের ক্ষেত্রে নাক ডাকা বাড়ে।

কখন নাক ডাকা চিন্তার বিষয়

মাঝে মধ্যে নাক ডাকা সাধারণ ব্যাপার, এতে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু যদি প্রতিদিন উচ্চ শব্দে নাক ডাকেন, ঘন ঘন ঘুম ভেঙে যায় বা শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে তবে সেটা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া নামক ঘুমের রোগের লক্ষণ হতে পারে।

এ রোগে ঘুমের সময় বারবার শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, ফলে শরীর ঠিকমতো অক্সিজেন পায় না এবং দিনভর ক্লান্তি থাকে। এ ছাড়া মাথাব্যথা বা মনোযোগের ঘাটতিও দেখা দেয়।

তাই আপনার নাক ডাকার সমস্যাটি যদি প্রতিদিনের সমস্যা হয়ে থাকে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

নাক ডাকা কমাতে বা বন্ধ করতে কী করা যায়?

নাক ডাকা কমানোর বেশ কিছু উপায় আছে। যেমন:

নাক ডাকার সমস্যায় ভুগছেন? জেনে নিন সমাধান

১. দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন

– ওজন কমানো

– রাতে মদ্যপান বা ঘুমের ওষুধ না খাওয়া

– পাশ ফিরে ঘুমানো

– প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানো ও জাগা

– পর্যাপ্ত পানি পান করা

২. ঘুমের পরিবেশ ঠিক রাখা

– ঘরে যেন ধুলাবালি না থাকে, অ্যালার্জি যেন না হয়

– শুষ্ক বাতাস থাকলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা

৩. নাক বন্ধ থাকলে তার চিকিৎসা

– নাকের স্প্রে, নাক পরিষ্কারের জন্য স্যালাইন ব্যবহার

– যদি নাকের হাড় বাঁকা থাকে, তাহলে ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন

৪. চিকিৎসা পদ্ধতি

– যদি স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকে, তাহলে বিশেষ মেশিন ব্যবহার করতে হয় যেটা শ্বাস নিতে সাহায্য করে

– কিছু ডেন্টাল যন্ত্র আছে, যা জিভ বা চোয়াল ঠিক অবস্থানে রাখতে সাহায্য করে

– কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করা লাগে, বিশেষ করে যদি শ্বাসনালি খুব বেশি সরু হয়ে যায়

নাক ডাকা অনেকের কাছে তেমন কিছু না মনে হলেও, এটি একবার ভালোভাবে বুঝে দেখা উচিত। কারণ এটি আপনার ঘুম, শরীরের বিশ্রাম এবং সুস্থতার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। সহজ কিছু অভ্যাস বদলেই অনেক ক্ষেত্রে নাক ডাকা কমে যায়। তবে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো।