বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় কদমতলীতে ৪০ বছরের ইউনিয়ন ভূমি অফিস স্থানান্তরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন নেপালতলী ও সুখানপুকুরের ৩৪টি গ্রামের মানুষ। রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টায় প্রথমে কদমতলী ভূমি অফিসের সামনে মানববন্ধন করেন সহস্রাধিক এলাকাবাসী।পরে তারা গাবতলী উপজেলা সদরে এসে বেলা ১১টার দিকে দ্বিতীয় দফায় মানববন্ধন কর্মসচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কদমতলী থেকে নেপালতলীতে ভূমি অফিস স্থানান্তরের ফলে ১১ গ্রামের মানুষ অতিরিক্ত সুবিধা পেলেও চরম দুর্ভোগে পড়বেন ৩৪টি গ্রামের ভূমি সেবাগ্রহণকারীরা। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ভূমি সেবাগ্রহীতাদের মতামত না নিয়েই নিজ বাড়ির পাশে ভূমি অফিস স্থানান্তর কার্যক্রম চূড়ান্ত করেছেন। এই সিদ্ধান্ত আমরা বাতিল চাই। না হলে আরও কঠোর আন্দোলন করা হবে। মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ভূমি অফিস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হাতে স্মারকলিপি দেন।
এরপর এলাকাবাসী দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া জেলা শহরে এসে জেলা প্রশাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এসব বক্তারা বলেন, সরকার হয়রানিমুক্ত ও জনবান্ধব ভূমি সেবার কথা বললে বাস্তবে তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। চক্রান্ত করে কদমতলীর ৪০ বছরের ভূমি অফিস স্থানান্তর করা হয়েছে। এতে নেপালতলী ও সুখানপুকুরের ৩৪ গ্রামের প্রায় অর্ধলাখ মানুষ ভূমি সেবা পেতে চরম দুর্ভোগে পড়বেন। বৈষম্যমূলক এমন সিদ্ধান্তে মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
যেকোনো শর্তে কদমতলীতে ভূমি অফিস বহাল রাখতেই হবে। পরে জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজের (যুগ্মসচিব) আশ্বাসে তার হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন এলাকাবাসী। এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, নেপালতলী ইউনিয়ন ভূমি অফিস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত আপাতত বাতিল করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে যেসব জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, সেসব সুবিধাজনক স্থানে ভূমি অফিস স্থাপন করা হবে।
পরে এলাকাবাসী শহরের সাতমাথায় এসে একই দাবিতে তৃতীয় দফায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এসব কর্মসূচি ও মানববন্ধনে অংশ নেন ও বক্তব্য রাখেন নেপালতলীর বুরুজ গ্র্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ টুকু ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজার মাস্টার।
এছাড়াও বক্তব্য দেন কবি, সংগঠক ও সাংস্কৃতিককর্মী কদমতলীর সিকতা কাজল, নেপালতলীর ইউপির মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. কাজল, বুরুজ গ্রামের ইউপি সদস্য মইদুল ইসলাম টুনু, কদমতলী গ্রামের ইউপি সদস্য শওকত হোসেন লিটন, সুখানপুকুরের ইউপি সদস্য আহসান হাবীব, উত্তর সরাতলী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম।
আরও বক্তব্য দেন গাবতলী উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল সরকার, ধলিরচর গ্রামের তোজাম মাস্টার, জাতহলিদা গ্রামের শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম, কদমতলীর ব্যবসায়ী আব্দুল মোমিন মুন্না, স্থানীয় ইমাম রায়হানুল ইসলাম তোহা প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ লুৎফর রহমান হীরা
ঢাকা অফিস: ১/জি,আদর্শ ছায়ানীড়,রিংরোড,শ্যামলী,আদাবর ঢাকা-১২০৭।
©2025 l চলনবিলের সময়