ঢাকা ০৩:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন! Logo টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত পাক ব্যাটাররা, মামুলি লক্ষ্য বাংলাদেশের Logo মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় নোবেলের মারামারি, অতঃপর… Logo হাতে পবিত্র কোরআন লিখলেন ৯ বছরের শিশু
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

বেরোবির দেয়ালে ‘শেখ হাসিনা ফিরবে’, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চলনবিলের সময় নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী ও জুলাই শহীদ দিবসের আগের রাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভবনের দেয়ালে ‘শেখ হাসিনা আসবে’ ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখা হয়েছে।

সকাল হতেই লাল রঙের স্প্রে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন, লাইব্রেরি, যাত্রী ছাউনি ও দেয়ালে দেয়ালে বড় অক্ষরে এসব স্লোগান লেখা চোখে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে স্লোগানগুলো মুছে ফেলেছেন।

এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় ছাত্রদল।

বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শাখা ছাত্রদল।

ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। সেই ফুটেজে একজনকে লিখতে দেখা গেলেও, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি— এখনও তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে এ ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনকারীরা।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। রাতের সময় ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া নিরাপত্তা কর্মীরা থাকার পরে তবুও কে বা কারা গভীর রাতে এসব দেয়ালে লিখলো— তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনকারীদের দাবি, পাঁচ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল সংস্কার না হওয়া ও প্রশাসনের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের অনেক কর্মী, সমর্থক ও নেতারা ভোল পাল্টিয়ে হলে থেকে এমন কর্মকাণ্ড করছেন বলে তাদের দাবি।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে আবাসিক হলে গা ঢাকা দিয়ে থাকা ছাত্রলীগকে ইঙ্গিত দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে বেরোবির সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন ও আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী শাহরিয়ার সোহাগ।

সুমন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ৫ আগস্ট এর পর বেরোবির হল সংস্কার নিয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, যার ফল আজ এটা। আজও ছাত্রলীগের প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে। যে বা যারাই এই ধৃষ্টতা দেখিয়েছে! অপেক্ষা!

ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে শাহরিয়ার সোহাগ লেখেন, ‘যার ন্যূনতম ছাত্রলীগ ব্যাকগ্রাউন্ড আছে বেরোবির কোনো হলে সে থাকতে পারবে না! ছাড় দেওয়ার বা পাওয়ার আর সুযোগ নাই।’

তাদের এই লেখা সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরে অনেক শিক্ষার্থী তার পোস্টের ভাষ্য হুবহু কপি করে নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেন, যা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

শামসুর রহমান সুমন বলেন, আবু সাঈদের শাহাদত দিবস উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এমন কাজ করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের সুপারিশে যেসব কর্মী-সমর্থক হলে উঠেছে, তাদের কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। অবিলম্বে তাদের সিট বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নতুন করে সিট বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড দিবসে এমন ঘটনা অত্যন্ত জঘন্য ও ন্যাক্কারজনক। শিক্ষার্থীরা এতে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।

তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী আমাদের আন্দোলনে এসে অংশ নিয়েছিল। তবে এখনো কেউ কেউ গোপনে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। তাদেরকে এখনই ঘোষণা দিতে হবে তারা জুলাইয়ের পক্ষের শক্তি নাকি ছাত্রলীগের পক্ষের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী কালবেলাকে বলেন, ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সেখানে একজনকে দেখা গেছে। তাকে খুঁজে বের করলে বোঝা যাবে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কি না, নাকি কোনো বহিরাগত। আইনের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বেরোবির দেয়ালে ‘শেখ হাসিনা ফিরবে’, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৬:৪৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী ও জুলাই শহীদ দিবসের আগের রাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভবনের দেয়ালে ‘শেখ হাসিনা আসবে’ ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখা হয়েছে।

সকাল হতেই লাল রঙের স্প্রে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন, লাইব্রেরি, যাত্রী ছাউনি ও দেয়ালে দেয়ালে বড় অক্ষরে এসব স্লোগান লেখা চোখে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে স্লোগানগুলো মুছে ফেলেছেন।

এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় ছাত্রদল।

বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শাখা ছাত্রদল।

ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। সেই ফুটেজে একজনকে লিখতে দেখা গেলেও, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি— এখনও তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে এ ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনকারীরা।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। রাতের সময় ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া নিরাপত্তা কর্মীরা থাকার পরে তবুও কে বা কারা গভীর রাতে এসব দেয়ালে লিখলো— তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনকারীদের দাবি, পাঁচ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল সংস্কার না হওয়া ও প্রশাসনের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের অনেক কর্মী, সমর্থক ও নেতারা ভোল পাল্টিয়ে হলে থেকে এমন কর্মকাণ্ড করছেন বলে তাদের দাবি।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে আবাসিক হলে গা ঢাকা দিয়ে থাকা ছাত্রলীগকে ইঙ্গিত দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে বেরোবির সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন ও আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী শাহরিয়ার সোহাগ।

সুমন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ৫ আগস্ট এর পর বেরোবির হল সংস্কার নিয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, যার ফল আজ এটা। আজও ছাত্রলীগের প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে। যে বা যারাই এই ধৃষ্টতা দেখিয়েছে! অপেক্ষা!

ক্ষোভ জানিয়ে ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে শাহরিয়ার সোহাগ লেখেন, ‘যার ন্যূনতম ছাত্রলীগ ব্যাকগ্রাউন্ড আছে বেরোবির কোনো হলে সে থাকতে পারবে না! ছাড় দেওয়ার বা পাওয়ার আর সুযোগ নাই।’

তাদের এই লেখা সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরে অনেক শিক্ষার্থী তার পোস্টের ভাষ্য হুবহু কপি করে নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেন, যা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

শামসুর রহমান সুমন বলেন, আবু সাঈদের শাহাদত দিবস উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এমন কাজ করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের সুপারিশে যেসব কর্মী-সমর্থক হলে উঠেছে, তাদের কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। অবিলম্বে তাদের সিট বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নতুন করে সিট বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড দিবসে এমন ঘটনা অত্যন্ত জঘন্য ও ন্যাক্কারজনক। শিক্ষার্থীরা এতে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।

তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী আমাদের আন্দোলনে এসে অংশ নিয়েছিল। তবে এখনো কেউ কেউ গোপনে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। তাদেরকে এখনই ঘোষণা দিতে হবে তারা জুলাইয়ের পক্ষের শক্তি নাকি ছাত্রলীগের পক্ষের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী কালবেলাকে বলেন, ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সেখানে একজনকে দেখা গেছে। তাকে খুঁজে বের করলে বোঝা যাবে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কি না, নাকি কোনো বহিরাগত। আইনের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।