ঢাকা ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

ফুটবলে নারী-পুরুষ বৈষম্য: প্রধান কারণ আয় এবং আবেদন

স্পোর্টস ডেস্ক,চলনবিলের সময়
  • আপডেট সময় : ১১:০৬:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫ ৯ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নারী সুপার লিগে আর্সেনাল প্রতিপক্ষ লিভারপুলের দুর্গে হানা দিয়ে ফরোয়ার্ড অলিভিয়া স্মিথকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এজন্য খরচ হয়েছে প্রায় ১ মিলিয়ন পাউন্ড। টাকা রূপান্তরে অঙ্কটা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি। এ ট্রান্সফার ফি কিন্তু বিশ্বরেকর্ড গড়েছে, যা নিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনামও হয়েছে। পুরুষ ফুটবলের সঙ্গে তুলনা করলে অঙ্কটা নিতান্তই নগণ্য।

পুরুষ ফুটবলে ৫০তম ব্যয়বহুল ট্রান্সফার ছিল দুসান ভ্লাহোভিচের ফিওরেন্তিনা ছেড়ে জুভেন্তাসে নাম লেখানোর ঘটনায়। ২০২২ সালের ওই ট্রান্সফারের জন্য গুনতে হয়েছিল ৭০ মিলিয়ন ইউরো। টাকায় অঙ্কটা প্রায় হাজার কোটি! নারী ফুটবলের তুলনায় পুরুষদের বিশাল এ তারতম্য শুধু ট্রান্সফার মার্কেটে সীমাবদ্ধ নয়; বরং সব ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা যাচ্ছে। ফিফা বিশ্বকাপের দিকে দৃষ্টি দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হচ্ছে। ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে অর্থ পুরস্কার ছিল ৪৪০ মিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের নারী বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে অঙ্কটা ছিল ১১০ মিলিয়ন ডলার। প্রশ্ন হচ্ছে, সব ক্ষেত্রে সমতার স্লোগান দেওয়া পশ্চিমাদের মাঝে কেন এমন নারী-পুরুষ বৈষম্য!

বৈষম্যের প্রধান কারণ দুই বিভাগের ফুটবলের অবস্থান দুই মেরুতে। পুরুষ ফুটবলে মিডিয়া কভারেজ, প্রচার স্বত্ব, পৃষ্ঠপোষক ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অর্থের থলে নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে লড়াই করে। এ কারণে দিনের পর দিন অর্থ-সংক্রান্ত পাগলামি বেড়েই চলেছে এখানে। সেই পাগলামির চূড়ান্ত রূপ দেখা গেছে ২০১৭ সালে। বার্সেলোনা থেকে ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারকে উড়িয়ে নেওয়ার পথে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) খরচ করেছিল ২২২ মিলিয়ন ইউরো! টাকায় অঙ্কটা ছিল ৩ হাজার ১৬৬ কোটি প্রায়! ফুটবলে ১০০ মিলিয়ন কিংবা তার বেশি মূল্য দিয়ে ট্রান্সফারের ঘটনা আছে ১৫টি। সেখানে নারী ফুটবলে ১ মিলিয়নই বিশ্বরেকর্ড।

পুরুষ ও নারী বিভাগে বিশাল এ তারতম্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ফুটবলে অবশ্য পারিশ্রমিকের দিক থেকে বৈষম্য নেই। অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর সেখানে বৈষম্য দূর করা হয়েছে বটে, এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিন্তু থেমে নেই। সাবেক আর্সেনাল ডিফেন্ডার হেক্টর বেলেরিন বরাবরই নারী-পুরুষ সমতার ইস্যুতে সরব। স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল বেতিসে খেলা রাইটব্যাক এ প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘আমি চাই ফুটবলে নারী ও পুরুষের মাঝে সমতা থাকুক। পুরুষদের সমান আয়ের পথ সুগম হোক নারীদেরও।

হেক্টর বেলেরিন যতই সরব হোন না কেন, দুই বিভাগের আয়ে ভারসাম্য আনতে না পারলে সমতা আনা কঠিন না, অসম্ভব। কী কারণে—তার উদাহরণ হিসেবে ইংলিশ ফুটবলের একটা তুলনা টানা যাক। ইংল্যান্ডের নারী সুপার লিগের জন্য স্কাই ও বিবিসি ৬৫ মিলিয়ন পাউন্ডের রেকর্ড চুক্তি করেছে ২০২৪ সালের অক্টোবরে। প্রিমিয়ার লিগের ক্ষেত্রে অঙ্কটা শুনলে আপনার চোখ মাথায় উঠতে পারে। সেটা ৬.৭ বিলিয়ন পাউন্ড! এ চিত্রটা শুধু ইংল্যান্ডে নয়, বিশ্বফুটবলের প্রায় সর্বত্র বিদ্যমান। বিষয়টি কিন্তু সম্প্রচার স্বত্ব ইস্যুতে আটকে নেই। বরং আবেদন, প্রভাব, ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় নারীদের তুলনায় পুরুষদের কার্যক্রম যোজন যোজন এগিয়ে আছে। ‘যত গুড় তত মিষ্টি’—ভিত্তিতে চলছে বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ফুটবল কর্মকাণ্ড। এ জায়গায় ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ফুটবলে নারী-পুরুষ বৈষম্য: প্রধান কারণ আয় এবং আবেদন

আপডেট সময় : ১১:০৬:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

নারী সুপার লিগে আর্সেনাল প্রতিপক্ষ লিভারপুলের দুর্গে হানা দিয়ে ফরোয়ার্ড অলিভিয়া স্মিথকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এজন্য খরচ হয়েছে প্রায় ১ মিলিয়ন পাউন্ড। টাকা রূপান্তরে অঙ্কটা দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি। এ ট্রান্সফার ফি কিন্তু বিশ্বরেকর্ড গড়েছে, যা নিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যমে শিরোনামও হয়েছে। পুরুষ ফুটবলের সঙ্গে তুলনা করলে অঙ্কটা নিতান্তই নগণ্য।

পুরুষ ফুটবলে ৫০তম ব্যয়বহুল ট্রান্সফার ছিল দুসান ভ্লাহোভিচের ফিওরেন্তিনা ছেড়ে জুভেন্তাসে নাম লেখানোর ঘটনায়। ২০২২ সালের ওই ট্রান্সফারের জন্য গুনতে হয়েছিল ৭০ মিলিয়ন ইউরো। টাকায় অঙ্কটা প্রায় হাজার কোটি! নারী ফুটবলের তুলনায় পুরুষদের বিশাল এ তারতম্য শুধু ট্রান্সফার মার্কেটে সীমাবদ্ধ নয়; বরং সব ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা যাচ্ছে। ফিফা বিশ্বকাপের দিকে দৃষ্টি দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হচ্ছে। ২০২২ সালের ফিফা বিশ্বকাপে অর্থ পুরস্কার ছিল ৪৪০ মিলিয়ন ডলার। ২০২৩ সালের নারী বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে অঙ্কটা ছিল ১১০ মিলিয়ন ডলার। প্রশ্ন হচ্ছে, সব ক্ষেত্রে সমতার স্লোগান দেওয়া পশ্চিমাদের মাঝে কেন এমন নারী-পুরুষ বৈষম্য!

বৈষম্যের প্রধান কারণ দুই বিভাগের ফুটবলের অবস্থান দুই মেরুতে। পুরুষ ফুটবলে মিডিয়া কভারেজ, প্রচার স্বত্ব, পৃষ্ঠপোষক ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অর্থের থলে নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে লড়াই করে। এ কারণে দিনের পর দিন অর্থ-সংক্রান্ত পাগলামি বেড়েই চলেছে এখানে। সেই পাগলামির চূড়ান্ত রূপ দেখা গেছে ২০১৭ সালে। বার্সেলোনা থেকে ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারকে উড়িয়ে নেওয়ার পথে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি) খরচ করেছিল ২২২ মিলিয়ন ইউরো! টাকায় অঙ্কটা ছিল ৩ হাজার ১৬৬ কোটি প্রায়! ফুটবলে ১০০ মিলিয়ন কিংবা তার বেশি মূল্য দিয়ে ট্রান্সফারের ঘটনা আছে ১৫টি। সেখানে নারী ফুটবলে ১ মিলিয়নই বিশ্বরেকর্ড।

পুরুষ ও নারী বিভাগে বিশাল এ তারতম্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ফুটবলে অবশ্য পারিশ্রমিকের দিক থেকে বৈষম্য নেই। অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর সেখানে বৈষম্য দূর করা হয়েছে বটে, এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কিন্তু থেমে নেই। সাবেক আর্সেনাল ডিফেন্ডার হেক্টর বেলেরিন বরাবরই নারী-পুরুষ সমতার ইস্যুতে সরব। স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল বেতিসে খেলা রাইটব্যাক এ প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘আমি চাই ফুটবলে নারী ও পুরুষের মাঝে সমতা থাকুক। পুরুষদের সমান আয়ের পথ সুগম হোক নারীদেরও।

হেক্টর বেলেরিন যতই সরব হোন না কেন, দুই বিভাগের আয়ে ভারসাম্য আনতে না পারলে সমতা আনা কঠিন না, অসম্ভব। কী কারণে—তার উদাহরণ হিসেবে ইংলিশ ফুটবলের একটা তুলনা টানা যাক। ইংল্যান্ডের নারী সুপার লিগের জন্য স্কাই ও বিবিসি ৬৫ মিলিয়ন পাউন্ডের রেকর্ড চুক্তি করেছে ২০২৪ সালের অক্টোবরে। প্রিমিয়ার লিগের ক্ষেত্রে অঙ্কটা শুনলে আপনার চোখ মাথায় উঠতে পারে। সেটা ৬.৭ বিলিয়ন পাউন্ড! এ চিত্রটা শুধু ইংল্যান্ডে নয়, বিশ্বফুটবলের প্রায় সর্বত্র বিদ্যমান। বিষয়টি কিন্তু সম্প্রচার স্বত্ব ইস্যুতে আটকে নেই। বরং আবেদন, প্রভাব, ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় নারীদের তুলনায় পুরুষদের কার্যক্রম যোজন যোজন এগিয়ে আছে। ‘যত গুড় তত মিষ্টি’—ভিত্তিতে চলছে বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ফুটবল কর্মকাণ্ড। এ জায়গায় ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও।