পানিশূন্য ডোবায় ৭ লাখ টাকার ঘাট

- আপডেট সময় : ০৬:৫৭:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে

পুকুর না বলে এটাকে পরিত্যক্ত ডোবা বলা যেতে পারে। তারপরও সরকারের প্রায় সাত লাখ টাকা খরচ করে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে ঘাট। ঘাটটি কোনোভাবেই জনকল্যাণে আসছে না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিগড় ইউনিয়নের চুংলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পুকুর ও খাল উন্নয়ন প্রকল্পে চুংলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুকুরে ঘাট নির্মাণ প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। সম্প্রতি শেষ হয়েছে এর নির্মাণ কাজ। কাজ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের মনে ছিল কৌতূহল।
এলাকাবাসী বলছেন, একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ঘাট নির্মাণ করে অযথাই সরকারের টাকা নষ্ট করা হয়েছে। এখানে পানি না থাকায় এতে ব্যাঙের চাষ সম্ভব। এর অর্ধেক টাকা দিয়ে ডোবাটা ভরাট করে দিলে বাচ্চারা এতে খেলাধুলার সুযোগ পেত। আশপাশে অনেক শিশু, ঘাট থেকে পড়ে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
চুংলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিমা রানী দাস বলেন, স্কুলের পাশে এটি পুকুর নয়, ডোবা। চারপাশের বাড়ির ময়লা পানির আশ্রয়স্থল এটি। জমির পরিমাণ তিন শতাংশ হবে। এখানে সরকারিভাবে ঘাট নির্মাণ করা হয়েছে। ’২৪ সালের এপ্রিলে আমি এ স্কুলে যোগদানের আগেই ঘাটের বরাদ্দ পাওয়া যায়। এ ঘাট কোনো উপকারে আসছে না, আর আসবেও না। বরং স্কুলের বাচ্চাদের জন্য এটি একটি বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাচ্চাদের খেলার কোনো জায়গা নেই, এটি ভরাট করা গেলে বরং ভালো হতো।
ঘাটটি বরাদ্দ দেওয়ার সময় স্কুলের দায়িত্বে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইয়াসার হোসেন সিদ্দিকী। তিনি জানান, একদিন ঘাটাইলের উপসহকারী প্রকৌশলী খালিদ এসে বললেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি প্রকল্প আছে, আপনারা ইচ্ছা করলে তা গ্রহণ করতে পারেন। এ কথা শুনে ডোবার বাউন্ডারি করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। পরে প্রকৌশলী একটি ফরম দিয়ে সেখানে সই করতে বলেন। প্রকৌশলীর কথামতো সই করে দেন। এরপর জানতে পারেন ঘাট নির্মাণের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ফজলুর রহমান বলেন, আমি যোগদান করার আগেই ঘাটের ফাইনাল কাজ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি স্কুল কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুয়ায়ী নাকি এ প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল। তবে ওইখানে ঘাটটা করা ঠিক হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকল্প দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সচেতন হতে হবে। জনগুরুত্ব পাবে এমন জায়গায় প্রকল্প দিতে হবে। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি, ওইখানে ঘাট নির্মাণ না করে এই টাকা অন্যান্য জায়গায় ব্যবহার করার সুযোগ ছিল।