ঢাকা ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

জার্মানিতে কেমন আয় করেন অভিবাসীরা, যা বলছে গবেষণা

আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ১১:২৪:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপ কিংবা আমেরিকার মতো উন্নত দেশে পাড়ি জমান বহু মানুষ। মূল লক্ষ্য- ভালো আয় করে পরিবারকে সুখে রাখা। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা অনেক সময় সেই স্বপ্নের মতো হয় না। বিদেশে গিয়ে শুধু সামাজিক নয়, বরং অর্থনৈতিক বৈষম্যেও পড়তে হয় অভিবাসীদের, বিশেষ করে আয়সংক্রান্ত ক্ষেত্রে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে উঠে এসেছে এই বাস্তবতা। জার্মানির ন্যুরেমবার্গে অবস্থিত জার্মান ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চ পরিচালিত গবেষণাটিতে মূলত জার্মানিতে অভিবাসীদের আয়ের বৈষম্য ও তাদের অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে অভিবাসীরা স্থানীয় জার্মান নাগরিকদের তুলনায় গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ কম আয় করেন। শুধু প্রথম প্রজন্ম নয়, দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীরাও আয়ের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

গবেষণায় জার্মানি ছাড়াও কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, স্পেন ও নেদারল্যান্ডসসহ আটটি পশ্চিমা দেশের অভিবাসী জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

সেখানে দেখা গেছে, সব দেশেই কমবেশি আয়বৈষম্য রয়েছে। তবে সুইডেন ও কানাডা কিছুটা সফল হয়েছে এই ব্যবধান কমাতে। বিশেষত, দ্বিতীয় প্রজন্মের মধ্যে এ বৈষম্য অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।

তবে জার্মানিতে দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীদের আয়বৈষম্য এখনো গড়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক গড় ৫ দশমিক ৭ শতাংশের চেয়েও বেশি। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত অভিবাসীদের উত্তরসূরিরাও এখনো অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন।

সবচেয়ে বেশি আয়ের বৈষম্য দেখা গেছে স্পেনে (২৯.৩ শতাংশ)। এরপর রয়েছে কানাডা (২৭.৫%), নরওয়ে (২০.৩%), জার্মানি (১৯.৬%) এবং ফ্রান্স (১৮.৯%)।

গবেষকদের মতে, অভিবাসীদের অর্থনৈতিকভাবে সমতা নিশ্চিত করতে হলে শুধু চাকরির সুযোগ নয়, প্রয়োজন বৈষম্য হ্রাসে দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিকল্পিত নীতিমালা। বিশেষ করে দ্বিতীয় প্রজন্মের শিক্ষার মান উন্নয়ন, ভাষা শেখার সুযোগ এবং শ্রমবাজারে প্রবেশের বাধা দূর করার দিকেই জোর দিতে হবে।

এই গবেষণা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা- আন্তর্ভুক্তির নীতিতে আরও সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জার্মানিতে কেমন আয় করেন অভিবাসীরা, যা বলছে গবেষণা

আপডেট সময় : ১১:২৪:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপ কিংবা আমেরিকার মতো উন্নত দেশে পাড়ি জমান বহু মানুষ। মূল লক্ষ্য- ভালো আয় করে পরিবারকে সুখে রাখা। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা অনেক সময় সেই স্বপ্নের মতো হয় না। বিদেশে গিয়ে শুধু সামাজিক নয়, বরং অর্থনৈতিক বৈষম্যেও পড়তে হয় অভিবাসীদের, বিশেষ করে আয়সংক্রান্ত ক্ষেত্রে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞান সাময়িকী ‘নেচার’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে উঠে এসেছে এই বাস্তবতা। জার্মানির ন্যুরেমবার্গে অবস্থিত জার্মান ইনস্টিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চ পরিচালিত গবেষণাটিতে মূলত জার্মানিতে অভিবাসীদের আয়ের বৈষম্য ও তাদের অবস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানিতে অভিবাসীরা স্থানীয় জার্মান নাগরিকদের তুলনায় গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ কম আয় করেন। শুধু প্রথম প্রজন্ম নয়, দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীরাও আয়ের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।

গবেষণায় জার্মানি ছাড়াও কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, স্পেন ও নেদারল্যান্ডসসহ আটটি পশ্চিমা দেশের অভিবাসী জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

সেখানে দেখা গেছে, সব দেশেই কমবেশি আয়বৈষম্য রয়েছে। তবে সুইডেন ও কানাডা কিছুটা সফল হয়েছে এই ব্যবধান কমাতে। বিশেষত, দ্বিতীয় প্রজন্মের মধ্যে এ বৈষম্য অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে।

তবে জার্মানিতে দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীদের আয়বৈষম্য এখনো গড়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক গড় ৫ দশমিক ৭ শতাংশের চেয়েও বেশি। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত অভিবাসীদের উত্তরসূরিরাও এখনো অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন।

সবচেয়ে বেশি আয়ের বৈষম্য দেখা গেছে স্পেনে (২৯.৩ শতাংশ)। এরপর রয়েছে কানাডা (২৭.৫%), নরওয়ে (২০.৩%), জার্মানি (১৯.৬%) এবং ফ্রান্স (১৮.৯%)।

গবেষকদের মতে, অভিবাসীদের অর্থনৈতিকভাবে সমতা নিশ্চিত করতে হলে শুধু চাকরির সুযোগ নয়, প্রয়োজন বৈষম্য হ্রাসে দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিকল্পিত নীতিমালা। বিশেষ করে দ্বিতীয় প্রজন্মের শিক্ষার মান উন্নয়ন, ভাষা শেখার সুযোগ এবং শ্রমবাজারে প্রবেশের বাধা দূর করার দিকেই জোর দিতে হবে।

এই গবেষণা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা- আন্তর্ভুক্তির নীতিতে আরও সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।