সাগরিকা ম্যাজিকে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

- আপডেট সময় : ১১:২৬:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫ ৫ বার পড়া হয়েছে

শিরোপার লড়াইয়ে ছিল উত্তেজনার ছোঁয়া, ছিল অলিখিত ফাইনালের রোমাঞ্চ। সমীকরণ ছিল সরল—ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, আর জয় পেলে শিরোপা নেপালের। কিন্তু এ দলটিকে থামানো যেন এখন অসম্ভবই হয়ে উঠেছে! বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় লাল কার্ড নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরা সাগরিকার নৈপুণ্যে নেপালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের কিশোরীরা।
গতবার ভারতের সঙ্গে বিতর্কিতভাবে যৌথ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই স্মৃতি এখনো অনেকের মনে টাটকা। তবে এবার আর কোনো বিতর্ক নয়, জমজমাট লড়াইয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়ে এককভাবে শিরোপা ঘরে তুলেছে লাল-সবুজের মেয়েরা।
এবারের আসরে ভারতের অনুপস্থিতি কিছুটা আলোচনার জন্ম দিলেও বাংলাদেশ-নেপাল দ্বৈরথে তৈরি হয়েছিল ভিন্ন মাত্রার উত্তাপ। রাউন্ড রবিন লিগ ফরম্যাটে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের ছিল ১৫, নেপালের ১২। ম্যাচটি তাই দুদলের জন্যই ছিল ফাইনাল।
তবে মাঠে বাংলাদেশের দাপট দেখে বোঝার উপায় ছিল না, তারা কেবল ড্র করতে চায়! শুরু থেকেই আগ্রাসী ফুটবল খেলতে থাকেন মেয়েরা। ম্যাচের ৮ মিনিটেই গোল এনে দেন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা মোসাম্মৎ সাগরিকা। মাঝমাঠ থেকে চমৎকার থ্রু বল ধরে ডিফেন্ডারদের চমকে দিয়ে এগিয়ে যান, আর গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন বুদ্ধিদীপ্ত প্লেসিং শটে।
প্রথমার্ধে নেপাল যদিও একটি ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল—বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিলির ভুলে বল চলে যায় প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ডের কাছে। কিন্তু সাইড বারে লেগে ফিরে আসা বলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। বাংলাদেশও ব্যবধান বাড়াতে পারত, তবে মুনকি আক্তারের শট গোললাইন থেকে সেভ করেন আনিশা রায়।
প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-০ গোলে। বিরতির পর বাংলাদেশের দাপট সাগরিকার বললে আরও বেশি মানানসই হয় আরও বাড়ে। একের পর এক আক্রমণে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে নেপাল। দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিনটি গোল করে ব্যবধান ৪-০ তে নিয়ে যায় সাগরিকা।
এদিকে, একই দিন সকালে ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলের পাশে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান অনেকেই। সেই শোকের ছায়া পড়েছিল কিংস অ্যারেনায়ও। ম্যাচ শুরুর আগে খেলোয়াড় ও দর্শকরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
মাঠের ভেতরে একতরফা জয় আর মাঠের বাইরে মর্মান্তিক ট্র্যাজেডির ছায়া—সব মিলিয়ে এক আবেগময় দিনেই শিরোপা উল্লাসে ভেসেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল।