আইনজীবী আলিফ হত্যাসহ ৫ মামলায় চিন্ময়ের জামিন খারিজ

- আপডেট সময় : ০৬:১৮:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫ ১০ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাসহ পাঁচ মামলায় ইসকনের সাবেক সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জামিন দেওয়ার আবেদন আবারও খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাগুলোর শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারক হাসানুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চিন্ময়ের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তার আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যকে কঠোর নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, চিন্ময়ের জামিন আবেদনের পক্ষে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ মামলাতেই জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন।
চিন্ময় দাসের পক্ষে এদিন আইনজীবী আলিফ হত্যা, আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর আক্রমণ, হামলা-ভাঙচুরসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের হওয়া পাঁচটি মামলায় জামিনের আবেদন করেছিলেন। এসব মামলার এজাহারে চিন্ময় আসামি ছিলেন না। পরে পুলিশ তদন্তে তার সম্পৃক্ততা পাওয়ার তথ্য উল্লেখ করে আদালতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে।
আদালতের নির্দেশে কারাগারে থাকা চিন্ময়কে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়া প্রতিটি মামলায় তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের অনুমতিও পায় পুলিশ।
এর আগে, গত ৩ জুন একই মামলাগুলোতে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিক তার জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন। এরপর চিন্ময়ের আইনজীবীরা জামিনের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের দ্বারস্থ হন।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় ৩ ঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজনভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়।
আইনজীবী হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় মোট ছয়টি মামলা হয়। এর মধ্যে আইনজীবী খুনসহ পাঁচটি মামলায় চিন্ময়কে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, গত বছর ২৬ নভেম্বরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত। এ সময় চিন্ময়কে আদালতে আনা হয়নি। তার পক্ষে শুনানিতে ঢাকা থেকে আগত আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য অংশ নিয়েছেন।