হাদিস: ইসলামী জীবনের পথনির্দেশ

- আপডেট সময় : ১২:১৭:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫ ৭ বার পড়া হয়েছে

হাদিস হলো হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র বাণী, কর্ম এবং তার অনুমোদনের সংকলন। ইসলামী জীবনব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই হাদিস, যা মুসলমানদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে (আচার-আচরণ, নৈতিকতা, ও ইবাদতসহ) সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
কোরআনের পর হাদিসই মুসলমানদের জন্য প্রধান পথপ্রদর্শক। এটি আমাদের ইসলামের বাস্তব প্রয়োগ শেখায় এবং আল্লাহর বাণী অনুসারে জীবন পরিচালনায় সহায়তা করে। চলুন, জেনে নেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষণীয় হাদিস:
‘যার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ইমান থাকবে, সে জাহান্নামে যাবে না।’ (সহিহ মুসলিম, মিশকাত: ৫১০৮)
ব্যাখ্যা ও প্রেক্ষাপট:
এ হাদিসটি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি অত্যন্ত সান্ত্বনাদায়ক ঘোষণা, যা মুসলিম উম্মাহর জন্য আশার আলো। এখানে ‘সরিষা পরিমাণ’ বলার মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে—যদি কারও অন্তরে বিন্দু পরিমাণও ইমান থাকে, তবে সে ব্যক্তি চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে থাকবে না।
প্রচলিত কাহিনিতে বলা হয়, কেউ যদি কেবল অন্তর থেকে আল্লাহর একত্ব, নবুয়তের সত্যতা এবং আখিরাতের বিশ্বাস রাখে তবে সে যদিও পাপের কারণে শাস্তি পায়, তবুও আল্লাহ তাকে শেষ পর্যন্ত জাহান্নামে রাখবেন না। এই হাদিস আল্লাহর অশেষ দয়ার প্রমাণ।
এই হাদিসের শিক্ষা ও গুরুত্ব
ইমানের মূল্য অপরিসীম: ইমানের মাত্রা যতই কম হোক, তা মানুষের মুক্তির ভিত্তি হতে পারে।
আল্লাহর দয়ার বিস্তৃতি: আল্লাহ কেবল আমাদের বাহ্যিক কর্ম দেখে বিচার করেন না, অন্তরের বিশ্বাসকেও গুরুত্ব দেন।
আত্মবিশ্বাস ও আশাবাদ: গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি যেন কখনো আশা হারিয়ে না ফেলে। ইমান থাকলে, ফিরে আসার দরজা সবসময়ই খোলা থাকে।
আমাদের করণীয়
নিজ অন্তরকে ইমানের আলোয় জাগ্রত রাখা: নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও নেক কাজের মাধ্যমে ইমানকে সবসময় জীবন্ত রাখা জরুরি।
পাপ থেকে দূরে থাকা এবং তওবা করা: ইমান থাকলেও পাপ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই নিজেকে সংশোধন করে ফিরে আসা চাই।
আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখা: জীবনের নানা ব্যর্থতা ও গুনাহর পরও আল্লাহর রহমতের দরজা কখনো বন্ধ হয় না।
এ হাদিসটি কেবল একটি কথা নয়—এটি একজন মুসলমানের জীবনের আত্মিক শক্তি ও আশার উৎস। আল্লাহ যেন আমাদের অন্তরে সরিষা পরিমাণ ইমানকেও কবুল করে নেন, এবং সেই ইমানের বদৌলতে আমাদের পরকালীন মুক্তি দান করেন—এই হোক আমাদের প্রার্থনা।