‘চা পাতার ভর্তা আর রুটি খেয়েই চলে দিন’

- আপডেট সময় : ০২:০৩:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫ ৪৫ বার পড়া হয়েছে

‘চা পাতার ভর্তা আর আটার রুটি খেয়েই চলে দিন’—এই কথাটি যেন মৌলভীবাজার জেলার চা শ্রমিকদের জীবনের প্রতিচ্ছবি। প্রতিদিনের কঠোর পরিশ্রম আর ন্যূনতম উপার্জনের মধ্যেই টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
কমলগঞ্জ উপজেলার পদ্মছড়া চা বাগানের দৃশ্য ছিল এমনই—বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুর ২টায় চা পাতা তোলা শেষ করে ওজনের অপেক্ষায় ছিলেন নারী শ্রমিকরা। সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত টানা পরিশ্রমের পরও তাদের পাতে ওঠে না পুষ্টিকর খাবার; বরং সেই পুরোনো রুটিন—আটার রুটি, মুড়ি আর চা পাতার ভর্তা।

চা শ্রমিকদের দৈনন্দিন খাবার বলতে গেলে, সকালে কেউ খেয়ে আসে, কেউ বা সময়ের অভাবে নিয়ে আসে খাবারের পোটলা। মধ্যাহ্নের আহারে সাধারণত থাকে পান্তা ভাত, রুটি, মুড়ি, পেঁয়াজ, রসুন, লবণ আর সেই বিশেষ ‘পাতিচখা’—চা পাতার ভর্তা। যা তাদের কর্মঘণ্টার মাঝে ক্ষুধা মেটায়, তবে পুষ্টি জোগায় না।
সিলেট বিভাগের পর্যটনসমৃদ্ধ জেলা মৌলভীবাজারে রয়েছে ৯২টি চা বাগান। এখানকার বহু নারী শ্রমিক প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ করেন। সংসার, সন্তান, রান্না শেষে মাঠে গিয়ে চা পাতা তোলা—তাদের দিন শুরু হয় এমনই এক চক্রে।

মাধবপুর চা বাগানের কয়েকজন নারী শ্রমিক বলেন, এভাবে চলতে হচ্ছে অনেক বছর ধরে। খেয়ে না খেয়ে কাজ করতে হয়। কাজ না করলে আয় হয় না, আয় না হলে সংসার চলে না।
চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ থাকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই অপর্যাপ্ত। ন্যায্য মজুরি, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ আবাসন ও শিক্ষার সুযোগ এখনও বহু শ্রমিকের কাছে অধরা।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, প্রশাসন থেকে শ্রমিকদের সবসময় সহযোগিতা করা হয়। তারা বিভিন্ন সময় অসুস্থ ও সমস্যায় থাকেন। প্রশাসন তাদের খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে থাকে।