রিয়াদের ‘ভাগ্য বদল’ নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন

- আপডেট সময় : ০৫:৫৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থেকে গ্রেপ্তার আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদ এখন আলোচনার শীর্ষে। গ্রামের বাড়িতে হঠাৎ পাকা ভবন নির্মাণ নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
জানা গেছে, রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নবীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা আবু রায়হান দিনমজুর। এক সময় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মা নাজমুন নাহার অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রিয়াদ নবীপুর হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সরকারি মুজিব মহাবিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন। এরপর ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকেই তিনি কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর তিনি ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’-এর সমন্বয়ক হিসেবে বিভিন্ন স্থানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এরপর থেকেই তার দ্রুত উত্থান নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন শুরু হয়।
নবীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রিয়াদের একতলা পাকা ভবনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আয়তন আনুমানিক ৯০০ থেকে ১ হাজার বর্গফুট। স্থানীয় এক প্রকৌশলীর মতে, এমন ভবনের নির্মাণে ব্যয় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার মতো হতে পারে।
রিয়াদের বাবা আবু রায়হান বলেন, আমি রিকশা চালিয়ে ছেলেকে বড় করেছি। আমরা না খেয়ে ওকে শহরে পাঠাইছি। টিভিতে দেখি আমার ছেলেকে পুলিশে ধরেছে। তার বোন জামাইরা মিলে এবার আমরা ৫৬ হাজার টাকায় একটা গরু কোরবানি দিয়েছি। বাড়ি নির্মাণে রিয়াদ আমাদের সহযোগিতা করেছে।
রিয়াদের মা রেজিয়া বেগম দাবি করেন, সরকার থেকে পাওয়া কিছু ঢেউটিন বিক্রি করে এবং ‘আল-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ থেকে পাওয়া ৫০ হাজার টাকা ও বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে এই ভবনের কাজ শুরু করেছেন। তবে স্থানীয়রা তার এই দাবিকে অবিশ্বাস করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, মূলত জুলাই আন্দোলনে ভাগ্য খুলে যায় রিয়াদের। সমন্বয়ক পরিচয় যেন রিয়াদের আলাদীনের চেরাগ। সে এই চেরাগ দিয়ে এখন আলিশানভাবে চলাফেরা করে। দামি বাইক কিনেছে, পাকা বাড়ি করছে।
রিয়াদের সহপাঠী কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, রিয়াদ কৌশলে চলাফেরা করত। কাদের মির্জার সঙ্গে ছবি তুলে সে তখন বড় নেতা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিত।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের। রিয়াদ এই ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। চাঁদাবাজির ঘটনার পর তাকে পদ থেকে বহিষ্কারের তথ্য প্রচার করা হয়।
এই সংগঠন হওয়ার আগে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছিল রিয়াদকে।