ঢাকা ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

৫০ লাখ নারী প্রধানের নামে হবে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ : তারেক রহমান

চলনবিলের সময় নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নারীদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বিএনপি আগামী দিনের সকল কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে পরিবার হিসেবে যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে পরিবারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে থেকে আমরা যেটা পরিকল্পনা করছি, সামনের দিনগুলোতে সুযোগ আসলে বাস্তবায়ন করার সেটা হচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ লাখ প্রান্তিক পর্যায়ে যে পরিবার আছে। তাদের কাছে আমরা ফ্যামিলি কার্ড চালু করব।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি জনগণের রায় রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের নারী প্রধানের নামে কিন্তু এই ফ্যামিলি কার্ডটি আমরা ইস্যু করব। এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক অথবা প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। আমরা আশা করছি, এই ধরনের উদ্যোগে পরিবার এবং সমাজে একদিকে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে। অপরদিকে পরিবারগুলোর সামনে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সুযোগও তৈরি হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে নারীর অবদান শীর্ষক’ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।

সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস।

অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে নারীদের অবদানের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং পরে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সন্মাননা মেডেল প্রদান করে আয়োজন কমিটি। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, তাহসিনা রুশদীর লুনা, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, শহীদ পরিবারের মধ্যে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় টকশো উপস্থাপক হাসিনা আখতার বক্তব্য রাখেন। এসময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, মহিলা দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মমতাজ আলোসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিটি নাগরিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশে উগ্রবাদ যাতে মাথাচড়া না দিতে পারে সেজন্য নারী সমাজকে সজাগ থাকতে হবে। একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া দরকার তেমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে যাতে আর কোনোভাবেই আর কোনোদিন ফ্যাসিবাদ-উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথা চারা দিয়ে উঠতে না পারে। এ ব্যাপারে বিশেষ করে নারী সমাজকে অত্যন্ত সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে। এ জন্য আমি সমগ্র বাংলাদেশের মা-বোনদের আহ্বান জানাই।

গণতন্ত্রকামী জনসাধারণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আসুন, নারী-পুরুষ-শিশু, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য শহীদদের কাঙ্ক্ষিত একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সবার জন্য একটি নিরাপদ একটি গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান অভিযাত্রায় অতীতের মতো আগামী দিনেও আমরা আমাদের মা-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থন আশা করি দৃঢ়ভাবে।

ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে আমার মাও এক সন্তানকে হারিয়েছেন মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, ‘বিগত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক মা তার প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। আমার মা-ও (খালেদা জিয়া) তার এক সন্তানকে (আরাফাত রহমান কোকো) হারিয়েছেন আপনাদেরই মতো। বহু স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছেন, বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন, অনেক মা বহুভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। অনেক পরিবারের পারিবারিক বন্ধন ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ অবসানের পর আমাদের সবার সামনে শিশু-নারী-পুরুষ-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ সামনে এসেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শহীদদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামীদিন নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নারীদের উন্নয়নে জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার নানা পদক্ষেপের কথা তুলেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমবারের মতো একটি পৃথক নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া নারী শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতনে শিক্ষার সুযোগ চালু করেছিলেন। বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূল ধারার বাইরে রেখে কখনোই আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করতে পারব না, নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব নয়। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে শুধু বাংলাদেশ নয়, কখনোই কোনো রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারে না। সে কারণে নারী শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বিএনপি আগামী দিনের সকল কর্মপরিকল্পনাগুলোকে সাজিয়েছে বা গ্রহণ করছে।

বিশ্বায়নের এই সময়ে নারীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশে নারীদের জন্য শিক্ষা-চাকরি-ব্যবসাসহ সকল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত। শুধু নারী পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা-দীক্ষায় কমপক্ষে কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন অত্যন্তভাবে জরুরি। যদি, আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি মনে করি, বিশেষ করে নারীদের শিক্ষাদানে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা গেলে নারীর প্রতি বৈষম্য লোকের পাশাপাশি অর্থনৈতিক টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে পারিবারিক সহিংসতাও রোধ করবে বা রোধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। সেই লক্ষ্যেই বিএনপির স্লোগান ক্ষমতায়িত নারী শক্তি, পরিবারের মুক্তি। এ কারণেই বিএনপির নীতি মানবিক মূল্যবোধ উজ্জীবিত দক্ষ জনশক্তি তৈরির রাজনীতি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির রাজনীতি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

৫০ লাখ নারী প্রধানের নামে হবে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ : তারেক রহমান

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

নারীদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বিএনপি আগামী দিনের সকল কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে পরিবার হিসেবে যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে পরিবারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে থেকে আমরা যেটা পরিকল্পনা করছি, সামনের দিনগুলোতে সুযোগ আসলে বাস্তবায়ন করার সেটা হচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ লাখ প্রান্তিক পর্যায়ে যে পরিবার আছে। তাদের কাছে আমরা ফ্যামিলি কার্ড চালু করব।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি জনগণের রায় রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের নারী প্রধানের নামে কিন্তু এই ফ্যামিলি কার্ডটি আমরা ইস্যু করব। এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক অথবা প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। আমরা আশা করছি, এই ধরনের উদ্যোগে পরিবার এবং সমাজে একদিকে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে। অপরদিকে পরিবারগুলোর সামনে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সুযোগও তৈরি হবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) মিলনায়তনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে নারীর অবদান শীর্ষক’ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।

সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস।

অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে নারীদের অবদানের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং পরে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সন্মাননা মেডেল প্রদান করে আয়োজন কমিটি। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলাম, তাহসিনা রুশদীর লুনা, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, শহীদ পরিবারের মধ্যে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় টকশো উপস্থাপক হাসিনা আখতার বক্তব্য রাখেন। এসময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক নিলোফার চৌধুরী মনি, মহিলা দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মমতাজ আলোসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিটি নাগরিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশে উগ্রবাদ যাতে মাথাচড়া না দিতে পারে সেজন্য নারী সমাজকে সজাগ থাকতে হবে। একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া দরকার তেমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে যাতে আর কোনোভাবেই আর কোনোদিন ফ্যাসিবাদ-উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথা চারা দিয়ে উঠতে না পারে। এ ব্যাপারে বিশেষ করে নারী সমাজকে অত্যন্ত সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে। এ জন্য আমি সমগ্র বাংলাদেশের মা-বোনদের আহ্বান জানাই।

গণতন্ত্রকামী জনসাধারণের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আসুন, নারী-পুরুষ-শিশু, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য শহীদদের কাঙ্ক্ষিত একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সবার জন্য একটি নিরাপদ একটি গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান অভিযাত্রায় অতীতের মতো আগামী দিনেও আমরা আমাদের মা-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থন আশা করি দৃঢ়ভাবে।

ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে আমার মাও এক সন্তানকে হারিয়েছেন মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, ‘বিগত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক মা তার প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। আমার মা-ও (খালেদা জিয়া) তার এক সন্তানকে (আরাফাত রহমান কোকো) হারিয়েছেন আপনাদেরই মতো। বহু স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছেন, বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন, অনেক মা বহুভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। অনেক পরিবারের পারিবারিক বন্ধন ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আজ শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ অবসানের পর আমাদের সবার সামনে শিশু-নারী-পুরুষ-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ সামনে এসেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শহীদদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামীদিন নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নারীদের উন্নয়নে জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার নানা পদক্ষেপের কথা তুলেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমবারের মতো একটি পৃথক নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া নারী শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতনে শিক্ষার সুযোগ চালু করেছিলেন। বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূল ধারার বাইরে রেখে কখনোই আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করতে পারব না, নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব নয়। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে শুধু বাংলাদেশ নয়, কখনোই কোনো রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারে না। সে কারণে নারী শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বিএনপি আগামী দিনের সকল কর্মপরিকল্পনাগুলোকে সাজিয়েছে বা গ্রহণ করছে।

বিশ্বায়নের এই সময়ে নারীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশে নারীদের জন্য শিক্ষা-চাকরি-ব্যবসাসহ সকল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত। শুধু নারী পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা-দীক্ষায় কমপক্ষে কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন অত্যন্তভাবে জরুরি। যদি, আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি মনে করি, বিশেষ করে নারীদের শিক্ষাদানে এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা গেলে নারীর প্রতি বৈষম্য লোকের পাশাপাশি অর্থনৈতিক টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে পারিবারিক সহিংসতাও রোধ করবে বা রোধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। সেই লক্ষ্যেই বিএনপির স্লোগান ক্ষমতায়িত নারী শক্তি, পরিবারের মুক্তি। এ কারণেই বিএনপির নীতি মানবিক মূল্যবোধ উজ্জীবিত দক্ষ জনশক্তি তৈরির রাজনীতি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির রাজনীতি।