পর্যটকবাহী হাউসবোটে ফেরি করে মদ বিক্রি

- আপডেট সময় : ০৬:৫২:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫ ৪৭ বার পড়া হয়েছে

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পর্যটনস্পটে রাখা হাউসবোটে চলছে বিদেশি মদ বিক্রি। এতে বিপাকে পড়ছেন হাউসবোট চালকরা।
স্থানীয় ও হাউসবোট চালকদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরসহ সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পর্যটনস্পটে প্রতিদিন হাজারো পর্যটক ঘুরতে আসেন। আর এসব পর্যটনস্পটে ঘুরতে ব্যবহার করেন হাউসবোট। হাউসবোট সাধারণত সুনামগঞ্জ জেলা শহর বা তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে পর্যটক নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর হয়ে বিকেলে নিলাদ্রী লেক এবং পরের দিন জাদুকাটা নদীতে পৌঁছায়। জাদুকাটা নদীর বারেকটিলা, শিমুল বাগান বা লাউড়েরগড় পাড়ে হাউসবোট রাখা হয়।
হাউসবোট টাঙ্গুয়ার হাওর, নিলাদ্রী লেক, যাদুকাটা নদীর পাড়ে (লাউড়েরগড়, শিমুল বাগান ও বারেকটিলা) পৌঁছা মাত্রই স্থানীয় ১০-১২ বছর বয়সী ছেলেরা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদের বোতল নিয়ে হাউসবোটে ওঠে বিক্রি করার জন্য।
শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে জাদুকাটা নদীর লাউড়েরগড় পাড়ে কয়েকজন ১০-১২ বছর বয়সের ছেলে বিদেশি মদ নিয়ে একটি হাউসবোটে এলে ছবি ও ভিডিও করায় পালিয়ে যায় তারা। ভিডিও ধারণকারী পর্যটকবাহী হাউসবোট ম্যানেজার তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের মধ্য তাহিরপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন শাওন বলেন, শুক্রবার দুপুরে আমাদের হাউসবোটটি জাদুকাটা নদীর পাড়ে (লাউড়েরগড়) আসা মাত্র ১০-১২ বছর বয়সের কয়েকটি ছেলে হাউসবোটে ওঠে বিদেশি মদ নিয়ে। পর্যটকদের কাছে এসে বলে ‘মাল লাগবে কি? বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মাল দিতে পারব।’ তখন আমি ভেতর থেকে এসে ছবি তুলি ও ভিডিও করি। পরে ছেলেগুলো হাউসবোট থেকে নেমে যায়।
তরঙ্গ বিলাশ হাউসবোটচালক জানে আলম বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটক নিয়ে এলেই ছোট ছোট ৮-১০টি নৌকা পর্যটকদের ঘুরাতে নিতে আসে। তারা এসে বলে ‘মামা লাল পানি (মদ) লাগবে? লাগলে দিতে পারি। যে কোনো ব্র্যান্ডের দেওয়া যাবে।
তিনি বলেন, শুধু টাঙ্গুয়ার হাওর নয় বারেকটিলা শিমুল বাগান গেলেও স্থানীয় মদ ব্যবসায়ীদের কারণে বিপাকে পড়তে হয়। পর্যটক ও আমাদের কাছে এসেও বলে মদ লাগবে কি না?
তাহিরপুর নৌ-পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ রব্বানী বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর, নিলাদ্রী লেক পাড়, বারেকটিলা ও শিমুল বাগান হাউসবোট যাওয়ার পরে মাদক ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের মাথা নষ্ট করে দেয়। এমনিতে অনেক পর্যটক মদ খোঁজে কিন্তু হাউসবোটের লোকজন অপারগতা স্বীকার করলেও স্থানীয় মদ ব্যবসায়ীরা এটা আরও সহজ করে দেয়। এখন তারা এই কাজে ছোট ছোট কম বয়সী ছেলেদের ব্যবহার করছে।
তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, পর্যটন এলাকাগুলোতে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। তাহিরপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকা। এখানে দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ ঘুরতে আসেন। কিন্তু কিছু অসাধু চক্র মাদক ব্যবসা বা সেবনের মাধ্যমে এই এলাকার পরিবেশ ও পর্যটনের সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা চালায়। তাদের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।