ঢাকা ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে পানি নেই, সংকটে কৃষি ও মৎস্য

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৩:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫ ৯ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এ বছর আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে হাওরাঞ্চলেও। ভরা বর্ষায়ও পানি স্বল্পতায় ভুগছে সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের মানুষ। পানি না থাকায় মৎস্য সংকটে পড়েছেন হাওরবাসী। প্রকট হচ্ছে কৃষি বিপর্যয়ের শঙ্কাও। হুমকিতে পড়েছে হাওর পাড়ের জীবন-জীবিকা। হাওরের জলজ উদ্ভিদও হারিয়ে যাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে আমন ধানের চাষ। পানির অভাবে শীতকালীন শাকসবজি চাষে কৃষকরা দুশ্চিতায়। এ জন্য প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর চালানো আগ্রাসী তৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও হাওর পাড়ের সচেতন মানুষ।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ঘাট গ্রামের নুরুল হক জানান, আমরা হাওর পাড়ের মানুষ গ্রামে থাকি। কৃষিই আমাদের ভরসা। কিন্তু, পানির অভাবে আমাদের খরচার হাওরের অধিকাংশ জমি অনবাদি থাকে।

লালপুর গ্রামের আব্দুস শহীদ জানান, হাওর পাড়ের মানুষ কৃষি ও মৎস্য আহরণের উপর নির্ভর। কৃষি-মৎস্য দ’ুটোই তাদের জীবন-জীবিকার উৎস। খাদ্যাভাব পূরণেও ধান-মাছের বিকল্প নেই। এ দুইয়ের সংস্থানই হয় হাওরে। তবে হাওর ও জলাশয়গুলোতে পানি কম থাকায় মাছের অপ্রতুলতার পাশাপাশি ফসল হানির শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এখন তারা কৃষি ও মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থান খুজছেন।

সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম সাঈদ জানান, হাওরে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, উদ্ভিদ ও বন-জঙ্গল উজাড়, ভূমির ব্যবহারে পরিবর্তন, পানির উৎসস্থল ভরাট ও অনাবৃষ্টিসহ নানা কর্মকান্ড প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এই প্রতিকূলতা জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে। ফলে অকাল বন্যা, খরা, ঝড়-জলোচ্ছাসের কবলে পড়ছে মানুষ। পুরো বর্ষা  মৌসুমে হাওরে পানি না থাকার জন্য এগুলোই দায়ী।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। মেঘালয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত না হলে এ অঞ্চলের বৃষ্টিপাতে পানি বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

জামালগঞ্জে হালি হাওর, পাগনার হাওর ও তাহিরপুরের শনি হাওরের-শুষ্ক মৌসুমে দেওয়া ফসল রক্ষা বাঁধের অধিকাংশই ভেসে উঠেছে। নদীবেষ্টিত হাওরে  বেশির ভাগ বাঁধ এভাবে ভেসে উঠায় নৌকা চলাচল করতে পারছে না। বর্ষার এ সময়ে যেখানে অন্তত চার-পাঁচ ফুট পানি থাকার কথা, সেখানে পুরোদস্তুর শুষ্ক পরিবেশ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় জলজ প্রাণ-প্রকৃতি বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।

মৎস্য আহরণ ও প্রজনন থেমে গেছে। ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার আলামত স্পষ্টত চোখে পড়েছে।

জামালগঞ্জের হালি হাওরপাড়ের কৃষক মো. আয়না মিয়া বলেন, হাওরে পানি নাই। ধান-মাছের ক্ষতি হইতাছে। পানি না থাকলে জমিতে ধান কম হইব। মাছও আইতো না। হাওরের ধান-মাছ দিয়াই তো দেশ চলে। এই রকম হইলে  তো সবারই ক্ষতি হইব। মানুষ প্রকৃতির ক্ষতি কইরা এই বিপদ ডাইকা আনতাছে। এইডা না থামাইলে এই রকম হইতেই থাকবো।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতি সুনামগঞ্জ শাখার আহ্বায়ক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, শ্রাবণে ঘাটে জল, ধানে শস্যে করে তল। অর্থাৎ শ্রাবণে পানি কমলে শেষ বর্ষার বন্যায় সব নষ্ট হবে। হাওরে পানি না থাকা পরিস্থিতির জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। তিনি আরও বলেন, হাওরে এখন যে পরিবেশ বিরাজ করছে এটা প্রকৃতিগত। আবহাওয়া ও জলবায়ু জনিত পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হচ্ছে। প্রকৃতিকে প্রকৃতির জায়গায় থাকতে দিতে হবে। না হলে হাওরে জীবন-জীবিকার নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হবে না।

বাংলাদেশ ক্ষেত-মজুর সমিতির কার্যকরী সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন রেজা বলেন, হাওর-বাওড়, নদীনালা, বিল বছরের পর বছর খনন না করায় উজান  থেকে নেমে আসা পানির গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। অপরিকল্পিত বাঁধের কারণেও হাওরে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে। প্রকৃতির প্রতি মানুষের বিরূপ আচরণ আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে। ফলে মৎস্য ও কৃষি দুই ক্ষেত্রই দুর্বল হচ্ছে। সরকার ও সাধারণ মানুষকে প্রকৃতিবান্ধব কাজকর্মে মনোযোগী হতে হবে।

উজানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে না বিধায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টাই মুখ্য। একসময় হাওরাঞ্চলে প্রচুর বন-জঙ্গল ছিল। এখন নাই বললেই চলে। ফরেস্ট (বন) থাকলে পরিবেশের ভারসাম্যতা বজায় থাকে। তখন সময়মতো বৃষ্টিপাত হবে, পানিও থাকবে।

উজান-ভাটি দুই খানেই অপরিকল্পিত বাঁধ হচ্ছে। জলাশয় ভরাট হচ্ছে। এগুলো পানির গতি আটকে ফেলছে। এ জন্য সাধারণ মানুষ ও নীতি-নির্ধারকদের পরিবেশ-প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল হওয়াটা জরুরি।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জে ৯৫টি ছোট-বড় হাওর এবং ছোট-বড় নদী আছে ১০৬টি। হাওরে পানি না থাকার বড় কারণ হচ্ছে বৃষ্টিপাত কম হওয়া। এ বছর পানি বিপদসীমা অতিক্রম দূরের কথা, সহনীয় মাত্রা থেকেও পানি কম। এটা আসলে ভালো লক্ষণ না। এক্ষেত্রে আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃতির উপর তো কারও হাত দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে যে কাজে প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হয়, তা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে পানি নেই, সংকটে কৃষি ও মৎস্য

আপডেট সময় : ০৯:৫৩:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫

এ বছর আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে হাওরাঞ্চলেও। ভরা বর্ষায়ও পানি স্বল্পতায় ভুগছে সুনামগঞ্জের হাওর পাড়ের মানুষ। পানি না থাকায় মৎস্য সংকটে পড়েছেন হাওরবাসী। প্রকট হচ্ছে কৃষি বিপর্যয়ের শঙ্কাও। হুমকিতে পড়েছে হাওর পাড়ের জীবন-জীবিকা। হাওরের জলজ উদ্ভিদও হারিয়ে যাচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে আমন ধানের চাষ। পানির অভাবে শীতকালীন শাকসবজি চাষে কৃষকরা দুশ্চিতায়। এ জন্য প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর চালানো আগ্রাসী তৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও হাওর পাড়ের সচেতন মানুষ।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ঘাট গ্রামের নুরুল হক জানান, আমরা হাওর পাড়ের মানুষ গ্রামে থাকি। কৃষিই আমাদের ভরসা। কিন্তু, পানির অভাবে আমাদের খরচার হাওরের অধিকাংশ জমি অনবাদি থাকে।

লালপুর গ্রামের আব্দুস শহীদ জানান, হাওর পাড়ের মানুষ কৃষি ও মৎস্য আহরণের উপর নির্ভর। কৃষি-মৎস্য দ’ুটোই তাদের জীবন-জীবিকার উৎস। খাদ্যাভাব পূরণেও ধান-মাছের বিকল্প নেই। এ দুইয়ের সংস্থানই হয় হাওরে। তবে হাওর ও জলাশয়গুলোতে পানি কম থাকায় মাছের অপ্রতুলতার পাশাপাশি ফসল হানির শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এখন তারা কৃষি ও মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থান খুজছেন।

সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম সাঈদ জানান, হাওরে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, উদ্ভিদ ও বন-জঙ্গল উজাড়, ভূমির ব্যবহারে পরিবর্তন, পানির উৎসস্থল ভরাট ও অনাবৃষ্টিসহ নানা কর্মকান্ড প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এই প্রতিকূলতা জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে। ফলে অকাল বন্যা, খরা, ঝড়-জলোচ্ছাসের কবলে পড়ছে মানুষ। পুরো বর্ষা  মৌসুমে হাওরে পানি না থাকার জন্য এগুলোই দায়ী।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। মেঘালয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত না হলে এ অঞ্চলের বৃষ্টিপাতে পানি বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

জামালগঞ্জে হালি হাওর, পাগনার হাওর ও তাহিরপুরের শনি হাওরের-শুষ্ক মৌসুমে দেওয়া ফসল রক্ষা বাঁধের অধিকাংশই ভেসে উঠেছে। নদীবেষ্টিত হাওরে  বেশির ভাগ বাঁধ এভাবে ভেসে উঠায় নৌকা চলাচল করতে পারছে না। বর্ষার এ সময়ে যেখানে অন্তত চার-পাঁচ ফুট পানি থাকার কথা, সেখানে পুরোদস্তুর শুষ্ক পরিবেশ বিরাজ করছে। এ অবস্থায় জলজ প্রাণ-প্রকৃতি বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।

মৎস্য আহরণ ও প্রজনন থেমে গেছে। ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার আলামত স্পষ্টত চোখে পড়েছে।

জামালগঞ্জের হালি হাওরপাড়ের কৃষক মো. আয়না মিয়া বলেন, হাওরে পানি নাই। ধান-মাছের ক্ষতি হইতাছে। পানি না থাকলে জমিতে ধান কম হইব। মাছও আইতো না। হাওরের ধান-মাছ দিয়াই তো দেশ চলে। এই রকম হইলে  তো সবারই ক্ষতি হইব। মানুষ প্রকৃতির ক্ষতি কইরা এই বিপদ ডাইকা আনতাছে। এইডা না থামাইলে এই রকম হইতেই থাকবো।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতি সুনামগঞ্জ শাখার আহ্বায়ক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, শ্রাবণে ঘাটে জল, ধানে শস্যে করে তল। অর্থাৎ শ্রাবণে পানি কমলে শেষ বর্ষার বন্যায় সব নষ্ট হবে। হাওরে পানি না থাকা পরিস্থিতির জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। তিনি আরও বলেন, হাওরে এখন যে পরিবেশ বিরাজ করছে এটা প্রকৃতিগত। আবহাওয়া ও জলবায়ু জনিত পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হচ্ছে। প্রকৃতিকে প্রকৃতির জায়গায় থাকতে দিতে হবে। না হলে হাওরে জীবন-জীবিকার নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হবে না।

বাংলাদেশ ক্ষেত-মজুর সমিতির কার্যকরী সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন রেজা বলেন, হাওর-বাওড়, নদীনালা, বিল বছরের পর বছর খনন না করায় উজান  থেকে নেমে আসা পানির গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। অপরিকল্পিত বাঁধের কারণেও হাওরে পানিশূন্যতা দেখা দিয়েছে। প্রকৃতির প্রতি মানুষের বিরূপ আচরণ আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছে। ফলে মৎস্য ও কৃষি দুই ক্ষেত্রই দুর্বল হচ্ছে। সরকার ও সাধারণ মানুষকে প্রকৃতিবান্ধব কাজকর্মে মনোযোগী হতে হবে।

উজানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে না বিধায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টাই মুখ্য। একসময় হাওরাঞ্চলে প্রচুর বন-জঙ্গল ছিল। এখন নাই বললেই চলে। ফরেস্ট (বন) থাকলে পরিবেশের ভারসাম্যতা বজায় থাকে। তখন সময়মতো বৃষ্টিপাত হবে, পানিও থাকবে।

উজান-ভাটি দুই খানেই অপরিকল্পিত বাঁধ হচ্ছে। জলাশয় ভরাট হচ্ছে। এগুলো পানির গতি আটকে ফেলছে। এ জন্য সাধারণ মানুষ ও নীতি-নির্ধারকদের পরিবেশ-প্রকৃতির প্রতি যত্নশীল হওয়াটা জরুরি।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জে ৯৫টি ছোট-বড় হাওর এবং ছোট-বড় নদী আছে ১০৬টি। হাওরে পানি না থাকার বড় কারণ হচ্ছে বৃষ্টিপাত কম হওয়া। এ বছর পানি বিপদসীমা অতিক্রম দূরের কথা, সহনীয় মাত্রা থেকেও পানি কম। এটা আসলে ভালো লক্ষণ না। এক্ষেত্রে আবহাওয়া-জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রকৃতির উপর তো কারও হাত দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে যে কাজে প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হয়, তা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তিনি।