ঢাকা ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

বিয়ে করতে যাওয়ার সময় বরের মৃত্যু

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:২৭:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫ ৩২ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কুমিল্লার চান্দিনায় গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ি যাচ্ছিলেন বর অমিত কুমার সরকার। পথিমধ্যে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলে নেওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। সেখান থেকে ঢাকা একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অমিত কুমার সরকার। বর অমিত সরকার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কেরণখাল ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের প্রবাসী দিলীপ সরকারের ছেলে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভিংরাব গ্রামে বিয়ে ঠিক হয়েছিল।

স্বজনরা জানান, অমিত বিদেশে থাকেন। কিছুদিন আগে বিয়ে করার উদ্দেশে বাংলাদেশে আসেন। বুধবার গ্রামের বাড়িতে অমিতের গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সকালে বিয়ে বাড়িতে বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে সানাইয়ের সুর। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ অতিথিদের উপস্থিতিতে ভরপুর। বিকেলে মঙ্গল ঘট স্থাপন করে সন্ধ্যায় ধুতি, পাঞ্জাবির সঙ্গে মাথায় মুকুট পড়ে চন্দনের ফোঁটায় বর সেজে মায়ের কোল ছেড়ে রওয়ানা করেন অমিত। বরযাত্রী নিয়ে রূপগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছুটে অমিতের বিয়ের গাড়িবহর।

তারা আরও জানান, এদিন রাতে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। রাত ৯টার দিকে বরযাত্রী চান্দিনা উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে রওনা হয়। ১০টার দিকে গৌরীপুর এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ অমিতের বুকে ব্যথা ওঠে। স্বজনরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ২টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ দিকে গত তিন বছর আগে ঘুমের মধ্যে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ছোট ভাই আশিক সরকার মারা গেছেন। প্রবাসী বাবা দিলীপ সরকার ও মা রাধা রাণী সরকার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন অমিতকে আঁকড়ে ধরে ছোট ছেলের শোক ভুলার চেষ্টা করেন। সেই ছেলেই তাদের ছেড়ে চলে গেলেন।

অমিতের প্রতিবেশী গুরুপদ সরকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বরযাত্রীর গাড়িবহরে আমিও ছিলাম। বরের গাড়ি অতিক্রম করে আমরা সামনে চলে যাই, কিছুক্ষণ পর বরের প্রাইভেটকারচালক আমাদের গাড়ি চালককে ফোন করে বলেন, গাড়ি ঘুরিয়ে গৌরীপুর আসেন। বর অসুস্থ। রাজধানীর ল্যাবএইডে নেওয়ার পর আর বিয়ে বাড়িতে যাওয়া হয়নি। সেখানে অমিতকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বিয়ে করতে যাওয়ার সময় বরের মৃত্যু

আপডেট সময় : ০৪:২৭:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

কুমিল্লার চান্দিনায় গাড়িতে করে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ি যাচ্ছিলেন বর অমিত কুমার সরকার। পথিমধ্যে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলে নেওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। সেখান থেকে ঢাকা একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অমিত কুমার সরকার। বর অমিত সরকার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কেরণখাল ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের প্রবাসী দিলীপ সরকারের ছেলে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভিংরাব গ্রামে বিয়ে ঠিক হয়েছিল।

স্বজনরা জানান, অমিত বিদেশে থাকেন। কিছুদিন আগে বিয়ে করার উদ্দেশে বাংলাদেশে আসেন। বুধবার গ্রামের বাড়িতে অমিতের গাঁয়ে হলুদের অনুষ্ঠান করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সকালে বিয়ে বাড়িতে বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে সানাইয়ের সুর। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ অতিথিদের উপস্থিতিতে ভরপুর। বিকেলে মঙ্গল ঘট স্থাপন করে সন্ধ্যায় ধুতি, পাঞ্জাবির সঙ্গে মাথায় মুকুট পড়ে চন্দনের ফোঁটায় বর সেজে মায়ের কোল ছেড়ে রওয়ানা করেন অমিত। বরযাত্রী নিয়ে রূপগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছুটে অমিতের বিয়ের গাড়িবহর।

তারা আরও জানান, এদিন রাতে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। রাত ৯টার দিকে বরযাত্রী চান্দিনা উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে রওনা হয়। ১০টার দিকে গৌরীপুর এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ অমিতের বুকে ব্যথা ওঠে। স্বজনরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ২টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ দিকে গত তিন বছর আগে ঘুমের মধ্যে হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ছোট ভাই আশিক সরকার মারা গেছেন। প্রবাসী বাবা দিলীপ সরকার ও মা রাধা রাণী সরকার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন অমিতকে আঁকড়ে ধরে ছোট ছেলের শোক ভুলার চেষ্টা করেন। সেই ছেলেই তাদের ছেড়ে চলে গেলেন।

অমিতের প্রতিবেশী গুরুপদ সরকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বরযাত্রীর গাড়িবহরে আমিও ছিলাম। বরের গাড়ি অতিক্রম করে আমরা সামনে চলে যাই, কিছুক্ষণ পর বরের প্রাইভেটকারচালক আমাদের গাড়ি চালককে ফোন করে বলেন, গাড়ি ঘুরিয়ে গৌরীপুর আসেন। বর অসুস্থ। রাজধানীর ল্যাবএইডে নেওয়ার পর আর বিয়ে বাড়িতে যাওয়া হয়নি। সেখানে অমিতকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।