
বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। প্রতিদিনের সংবাদ খুললেই চোখে পড়ে খুন, গুম, অপহরণ, মিথ্যাচার, রাজনৈতিক অস্থিরতা, মারামারি-হানাহানি, ধর্ষণ, শিশু হত্যা কিংবা নবজাতক চুরির মতো মর্মান্তিক ঘটনা। এগুলো শুধু বিচ্ছিন্ন সংবাদ নয়—বরং আমাদের সমাজব্যবস্থার গভীরে জমে থাকা অবক্ষয়ের প্রতিফলন।
সাম্প্রতিক সময়ে চিকিৎসা খাতে ডাক্তারদের অমানবিক আচরণ নিয়েও সাধারণ মানুষের ক্ষোভ দিন দিন বাড়ছে। যেখানে রোগী জীবনের আশায় হাসপাতালে ছুটে যায়, সেখানে যদি অবহেলা কিংবা অযত্নের শিকার হতে হয়, তবে সেটি সমাজে মানবিকতার শিকড়কেই নড়িয়ে দেয়।
রাজনৈতিক অস্থিরতা আর দলীয় সংঘর্ষ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলছে। শিশুদের প্রতি নির্যাতন, ধর্ষণ কিংবা হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। নবজাতক চুরি বা অপহরণ কেবল একটি পরিবার নয়, গোটা জাতির বিবেককেই নাড়া দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী? প্রথমত, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অপরাধী যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীলতা ও সংলাপের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। তৃতীয়ত, সমাজের প্রতিটি মানুষকে মানবিকতার মশাল জ্বালাতে হবে—কারণ আইন যতই কঠোর হোক না কেন, নৈতিকতার অভাব পূরণ করতে পারে না।
এখন সময় এসেছে আত্মসমালোচনার। আমরা কি এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে জীবন এত অনিরাপদ হয়ে উঠবে? আসুন, প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি, মানবিকতা ও ন্যায়বোধের পক্ষে দাঁড়াই।
কারণ, বাংলাদেশ বাঁচবে তখনই—যখন মানুষের জীবন, মর্যাদা ও নিরাপত্তা সবার আগে গুরুত্ব পাবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক
চলনবিলের সময়।