ঢাকা ০৩:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন! Logo টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত পাক ব্যাটাররা, মামুলি লক্ষ্য বাংলাদেশের Logo মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় নোবেলের মারামারি, অতঃপর… Logo হাতে পবিত্র কোরআন লিখলেন ৯ বছরের শিশু
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

শিল্পায়ন ও জ্বালানি সংকট: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে?

পরিবর্তন টিভি নিউজ
  • আপডেট সময় : ১০:৩০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫ ৭৬ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে শিল্পোৎপাদন যে কোনো দেশের উন্নয়নের প্রধান চাবিকাঠি। বাংলাদেশ, যে একসময় ছিল দরিদ্রতার এক প্রতিচ্ছবি, মঙ্গা আর দুর্ভিক্ষে বিপর্যস্ত, এখন শিল্পায়নের কারণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। যমুনার ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্মাণের পর মঙ্গা বা সাংবার্ষিক দুর্ভিক্ষ ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে। তবে এই সাফল্যের মূল চালিকাশক্তি ছিল সাশ্রয়ী দামে কলকারখানায় গ্যাস সরবরাহ। গ্যাস বাংলাদেশে শিল্পায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ধন শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। দেশীয় মজুত গ্যাস ব্যবহার করেই বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।

 

তবে বর্তমানে মজুত গ্যাসের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান মজুত মাত্র ১০ থেকে ১১ বছর চলতে পারে। এই সংকট মোকাবিলায় সাগরে গ্যাস উত্তোলন এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। অতীতে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে গ্যাস রপ্তানির জন্য কৌশল অবলম্বন করেছিল। কিন্তু দেশের রাজনীতিকরা সে ফাঁদে পা দেননি। তারা দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে গ্যাসের সম্পদ রপ্তানি থেকে বিরত থেকেছেন।

 

তবে বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। মজুত গ্যাস ফুরিয়ে গেলে বাংলাদেশ বিদেশনির্ভর হয়ে পড়বে, যা শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে। সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে। দেশের সম্ভাব্য প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখনই সময়। পাশাপাশি গার্হস্থ্য কাজে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের অপচয় বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এর বদলে এলপিজি বা বিকল্প জ্বালানি উৎস ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহিত করা উচিত। এ ধরনের পদক্ষেপ না নিলে শিল্প খাতে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।

 

বাংলাদেশ যে শিল্পায়নের অগ্রযাত্রায় অনেকটা এগিয়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু এই অগ্রযাত্রাকে টিকিয়ে রাখতে হলে এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা অপরিহার্য। সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান, বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণÑএই তিনটি ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা থমকে যেতে পারে।

 

বাংলাদেশের শিল্পোৎপাদন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যে ইন্ধন শক্তির ওপর নির্ভরশীল, তা বিবেচনায় রেখে এখন সময় দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেওয়ার। গ্যাস উত্তোলন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সঠিক কৌশল গ্রহণই হতে পারে বাংলাদেশের শিল্পায়নের ধারাবাহিক অগ্রগতির মূল ভিত্তি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শিল্পায়ন ও জ্বালানি সংকট: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে?

আপডেট সময় : ১০:৩০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

একবিংশ শতাব্দীর এই যুগে শিল্পোৎপাদন যে কোনো দেশের উন্নয়নের প্রধান চাবিকাঠি। বাংলাদেশ, যে একসময় ছিল দরিদ্রতার এক প্রতিচ্ছবি, মঙ্গা আর দুর্ভিক্ষে বিপর্যস্ত, এখন শিল্পায়নের কারণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। যমুনার ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্মাণের পর মঙ্গা বা সাংবার্ষিক দুর্ভিক্ষ ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে। তবে এই সাফল্যের মূল চালিকাশক্তি ছিল সাশ্রয়ী দামে কলকারখানায় গ্যাস সরবরাহ। গ্যাস বাংলাদেশে শিল্পায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ধন শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। দেশীয় মজুত গ্যাস ব্যবহার করেই বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।

 

তবে বর্তমানে মজুত গ্যাসের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান মজুত মাত্র ১০ থেকে ১১ বছর চলতে পারে। এই সংকট মোকাবিলায় সাগরে গ্যাস উত্তোলন এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি। অতীতে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে গ্যাস রপ্তানির জন্য কৌশল অবলম্বন করেছিল। কিন্তু দেশের রাজনীতিকরা সে ফাঁদে পা দেননি। তারা দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে গ্যাসের সম্পদ রপ্তানি থেকে বিরত থেকেছেন।

 

তবে বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। মজুত গ্যাস ফুরিয়ে গেলে বাংলাদেশ বিদেশনির্ভর হয়ে পড়বে, যা শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে। সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে দেশীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে, তবে তা অবশ্যই বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে। দেশের সম্ভাব্য প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখনই সময়। পাশাপাশি গার্হস্থ্য কাজে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের অপচয় বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এর বদলে এলপিজি বা বিকল্প জ্বালানি উৎস ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহিত করা উচিত। এ ধরনের পদক্ষেপ না নিলে শিল্প খাতে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।

 

বাংলাদেশ যে শিল্পায়নের অগ্রযাত্রায় অনেকটা এগিয়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু এই অগ্রযাত্রাকে টিকিয়ে রাখতে হলে এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা অপরিহার্য। সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান, বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি, এবং জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণÑএই তিনটি ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা থমকে যেতে পারে।

 

বাংলাদেশের শিল্পোৎপাদন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যে ইন্ধন শক্তির ওপর নির্ভরশীল, তা বিবেচনায় রেখে এখন সময় দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নেওয়ার। গ্যাস উত্তোলন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সঠিক কৌশল গ্রহণই হতে পারে বাংলাদেশের শিল্পায়নের ধারাবাহিক অগ্রগতির মূল ভিত্তি।