
পাবনার চাটমোহরে চলনবিল অঞ্চলের পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে নির্মিত দুটি অবৈধ সোঁতিবাধ উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুসা নাসের চৌধুরীর নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
চাটমোহর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানান, উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের খলিসাগাড়ী বিল এবং কিনু সরকারের ধর এলাকায় অবৈধভাবে সোঁতিবাধ স্থাপন করে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছিল। এতে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও মৎস্য সম্পদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। অভিযানে এসব অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদ করা হয়। তিনি আরও জানান, একটি অসাধু চক্র দীর্ঘদিন ধরে এমন কার্যক্রমে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে নবাগত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল মাহমুদ, হরিপুর ও গুনাইগাছা ইউনিয়নের প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান, থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তবে ঘটনাটিকে ঘিরে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এক অপ্রত্যাশিত বিষয়। উচ্ছেদ হওয়া সোঁতিবাধে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছবি টানানো ছিল! এ দৃশ্য স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
অনেকের ধারণা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর উদ্দেশ্যেই দলীয় নেতাদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, অবৈধ কর্মকাণ্ড আড়াল করতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিএনপি নেতাদের ফেস্টুন বাঁধের ওপর টানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে বিলচলন ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে জানান, সোঁতিবাধ স্থাপনে স্থানীয় কয়েকজন জড়িত। এদের মধ্যে বিলচলন ইউনিয়নের জাহিদ নামের এক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে আসে। তার সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও (রাত ৮টা ৫০ মিনিটে) তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে বিলচলন ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা যুবদল সভাপতি গোলজার হোসেন বলেন, সারা বাংলাদেশেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছবি লাগানো থাকে। কেউ হয়তো সোঁতিবাধে ফেস্টুন লাগিয়ে দিয়েছে। এতে আমি দোষের কিছু দেখি না। তবে সোঁতিবাধ স্থাপনের সঙ্গে নটাবাড়িয়ার আজাদ নামের একজন জড়িত থাকতে পারে বলে শুনেছি। তারা সরকারের অনুমতি নিয়েই বাঁধ দিয়েছে।
চলনবিল অঞ্চলে সোঁতিবাধের কারণে প্রতি বছর পানি প্রবাহে বাধা, মাছের প্রজনন ব্যাহত হওয়া এবং কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অবৈধ সোঁতিবাধ উচ্ছেদ কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চালানো হবে।