হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ, ভোগান্তি চরমে

: পাবনা জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১ সপ্তাহ আগে

19

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে দিন দিন বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষই আক্রান্ত হচ্ছেন এই পানিবাহিত রোগে। শয্যা সংকট, টয়লেটের অভাব ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ জন ডায়রিয়া রোগী। অথচ হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে মাত্র ১৬টি। বর্তমানে ভর্তি আছেন প্রায় একশ রোগী। বেড সংকটের কারণে অনেক রোগীকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে বারান্দা বা খোলা জায়গায়।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের স্বল্পসংখ্যক টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে শতাধিক রোগী ও স্বজনদের। টয়লেটের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কাও। পর্যাপ্ত টয়লেট না থাকায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় রোগী ও স্বজনদের, যা তাদের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন,

> “প্রতি বছর এই সময়টাতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়ে যায়। এ মৌসুমে খাবার দ্রুত নষ্ট হয়, ফলে তাতে জীবাণু জন্ম নেয়। অনেকেই বাসি বা খোলা খাবার খেয়ে ফেলেন—এ কারণেই ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। এখনই সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং নিরাপদ খাবার খেতে হবে।”

 

চিকিৎসা ব্যবস্থার চাপ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন,

> “ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৬টি বেড থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসাধীন প্রায় একশ রোগী। এতে চিকিৎসা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি শয্যা, ওষুধ ও খাবারের পরিমাণ বাড়ানো যায়, তাহলে আমরা আরও ভালোভাবে সেবা দিতে পারবো।”

 

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দা ও করিডোরে গাদাগাদি করে বসে আছেন রোগী ও স্বজনরা। কেউ বিছানায়, কেউবা মাটিতেই শুয়ে আছেন। অসুস্থ শিশুকে কোলে নিয়ে মায়েরা কাতর কণ্ঠে বলছেন চিকিৎসা পাওয়ার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার কথা।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে জনগণের সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। নিরাপদ পানি পান, পচা বা বাসি খাবার এড়িয়ে চলা, হাত ধোয়ার অভ্যাস—এসব মেনে চললে ডায়রিয়ার প্রকোপ অনেকটাই কমানো সম্ভব।

এদিকে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয়রা বলছেন, শয্যা সংখ্যা ও টয়লেটের ব্যবস্থা না বাড়ালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।