
চুয়াডাঙ্গা শহরের শ্যামলীপাড়া (শ্যাকড়াতলা) মোড়ে শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে ঘটে এক নাটকীয় ঘটনা। অন্যকে ফাঁসানোর জন্য পরিকল্পিত ফাঁদ পেতে উল্টো নিজেরাই ধরা পড়েছেন এক প্রতারক পুরুষ ও তার নারী সহযোগী। স্থানীয়রা দুজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আটকরা হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা খালিদ হোসেন ও চুয়াডাঙ্গা শহরের এক তরুণী। খালিদ দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে নানা প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন। সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকেও সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করতেন তিনি। নিজ এলাকায় প্রতারণা ধরা পড়ে যাওয়ায় কিছুদিন আগে শ্বশুরবাড়িতে এসে নতুন করে প্রতারণার জাল বিস্তার শুরু করেন।
শনিবার সন্ধ্যায় বাগানপাড়ার একটি নির্জন বাড়িতে এক নারীর সহায়তায় নতুন একটি ফাঁদ পেতে বসেছিলেন খালিদ। পরিকল্পনা ছিল—একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে টাকা আদায় করা। সব কিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলেও তাদের আচরণ স্থানীয়দের নজরে পড়ে যায়। সন্দেহজনক নড়াচড়ার কারণে এলাকাবাসী তাদের অনুসরণ করতে শুরু করেন।
একপর্যায়ে জনতা বাড়িটিতে প্রবেশ করে খালিদ ও ওই নারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় এক বোতল নেশাজাতীয় দ্রব্য। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান জানান,
“আটক খালিদ নিজেকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করত। পূর্বেও সে এই পরিচয়ে থানায় এসে বিভিন্ন সুবিধা নিতে চাইত। বর্তমানে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
স্থানীয়রা জানান, খালিদের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। তারা বলেন, “সে অনেকদিন ধরেই মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছিল। এবার নিজেই তার ফাঁদে ধরা পড়েছে।”
ঘটনার পর এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এমন ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় না আনলে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।