ঢাকা ০৩:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মেধাভিত্তিক দেশ গঠনে শিক্ষা অপরিহার্য: ব্যারিস্টার অসীম Logo রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা Logo জুলাই যোদ্ধাদের জন্য চাকরিতে কোটা থাকছে না : মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা Logo ৮ দফা দাবিতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করেছেন শিক্ষার্থীরা Logo বিআরটিএ পাবনা সার্কেলের অভিযানে ১২ টি মামলা ও ২৯ হাজার টাকা জরিমানা Logo পদ্মার ভাঙনে সুজানগরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শ শ বাড়ীঘর ও ফসলী জমি Logo ৭ম জন্মদিনে স্বপ্নকে শাজাহানপুর প্রেসক্লাবের উষ্ণ অভিনন্দন! Logo টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে বিধ্বস্ত পাক ব্যাটাররা, মামুলি লক্ষ্য বাংলাদেশের Logo মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় নোবেলের মারামারি, অতঃপর… Logo হাতে পবিত্র কোরআন লিখলেন ৯ বছরের শিশু
নোটিশঃ
 জরুরি সংবাদকর্মী আবশ্যক। আগ্রহীরা ইমেইল আবেদন করুনঃ chalonbilersomoy@gmail.com। চলনবিলের সময় এর সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। 

প্রাইমারি পাস না করেও অপারেশন করেন ‘ডাক্তার’ রশিদা

পরিবর্তন টিভি নিউজ ডেস্কঃ
  • আপডেট সময় : ০১:১১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে
চলনবিলের সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যশোরের মনিরামপুরে নিজ বাড়িতেই ‘অপারেশন থিয়েটার’ গড়ে তুলেছেন কথিত ডাক্তার রশিদা বেগম। ৫ম শ্রেণি পাস না করেও নিজেকে ‘সার্জারি ডাক্তার’ পরিচয় দিয়ে প্রায় ২০ পর ধরে পাইলস, টিউমারসহ নানা জটিল রোগের অপারেশন করছেন মৃত চাঁদসী মো. আব্দুর রশিদের স্ত্রী রশিদা বেগম। নিজেকে প্যারামেডিকেল ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মনিরামপুর, কেশবপুর, সাতক্ষীরা, বরিশাল অঞ্চলে তিনি এ চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রশিদা বেগম উপজেলার হাজরাকাটি বেলতলায় নিজের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন অপারেশন থিয়েটার। সার্জারি ডাক্তার না হয়েও চিকিৎসার নামে ধারাল ব্লেড ও কাঁচি দিয়ে চলছে অপারেশন। শুধু তাই নয়, রোগী আসতে না পারলে নিজেই কাপড় কাটার কাঁচি হাতে চলে যান রোগীর বাড়িতে। রোগীর বাড়িতে বসেই করেন জটিল অপারেশন।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এই ভুয়া চিকিৎসকের অপারেশনের ফলে অনেক রোগী মারাত্মক ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়েছেন। কেউ কেউ পচন ধরা ক্ষতের শিকার হয়েছেন। আবার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে রোগীর মৃত্যুও হয়েছে।

সরেজমিনে রশিদা বেগমের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, ঘরে মধ্যে রোগী দেখছেন রাশিদা খাতুন। খাটের নিচে, ওপরে ও চেয়ারের ওপর গজ ও রক্ত মাখা তুলা পড়ে রয়েছে। অন্য আরও একটি ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে ওষুধের প্যাকেট। ঘরের দেয়ালে ঝুলছে সিরিঞ্জ।

এদিকে রশিদা বেগম অপচিকিৎসায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কেশবপুর উপজেলার চাঁদড়া গ্রামের আছিয়া বেগম নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল রশিদা খাতুনের বিরুদ্ধে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী। কয়েকবার স্বাস্থ্য বিভাগ অভিযান পরিচালনা করার উদ্যোগ নিলে রশিদা খাতুন বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত আছিয়া বেগমের ছেলে আনিচুর রহমান বলেন, আমার মাকে রশিদা বেগমকে দেখাই। দেখে বলেন, জটিল সমস্যা। অপারেশন করতে হবে। পরে রশিদা বেগম বাড়িতেই অপারেশন করেন। বাড়িতে আনলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে আমার মা মারা যান।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমার বাড়িতে এসে রশিদা বেগম পাইলস অপারেশন করেন। কীভাবে অপারেশন করেছে জানতে চাইলে বলেন, প্রথমে অবশ করে নেন। তারপর কাপড় কাটা কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এ অপারেশনের কারণে আমার জীবন থেকে ভালো খাবার বন্ধ হয়ে গেছে এবং মলদ্বারের বামপাশ নষ্ট হয়ে গেছে।

অভিযাগের বিষয়ে রশিদা বেগম বলেন, আমার স্বামী প্যারামেডিকেল ডাক্তার ছিলেন। তার কাছ থেকে হাতে কলমে কাজ শেখা। তার মৃত্যুর পরে আমি চিকিৎসা দিচ্ছি। আমি সার্জারি ডাক্তার না হয়ে অপারেশন করেছি। এটা আমার ভুল হয়েছে।

রোগীর মৃত্যু বিষয়ে তিনি বলেন, অপারেশনের পর তো আর কোনো দ্বায় দায়িত্ব আমার থাকে না। অপারেশন পর্যন্ত আমার দায়িত্ব।

যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদেক রাসেল বলেন, ভুয়া ডাক্তার রশিদা বেগমকে হাতেনাতে ধরার জন্য কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু তিনি বাড়ি থেকে বারবার পালিয়ে গেছেন। তাকে আটকের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

প্রাইমারি পাস না করেও অপারেশন করেন ‘ডাক্তার’ রশিদা

আপডেট সময় : ০১:১১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

যশোরের মনিরামপুরে নিজ বাড়িতেই ‘অপারেশন থিয়েটার’ গড়ে তুলেছেন কথিত ডাক্তার রশিদা বেগম। ৫ম শ্রেণি পাস না করেও নিজেকে ‘সার্জারি ডাক্তার’ পরিচয় দিয়ে প্রায় ২০ পর ধরে পাইলস, টিউমারসহ নানা জটিল রোগের অপারেশন করছেন মৃত চাঁদসী মো. আব্দুর রশিদের স্ত্রী রশিদা বেগম। নিজেকে প্যারামেডিকেল ডাক্তার পরিচয় দিয়ে মনিরামপুর, কেশবপুর, সাতক্ষীরা, বরিশাল অঞ্চলে তিনি এ চিকিৎসা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রশিদা বেগম উপজেলার হাজরাকাটি বেলতলায় নিজের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন অপারেশন থিয়েটার। সার্জারি ডাক্তার না হয়েও চিকিৎসার নামে ধারাল ব্লেড ও কাঁচি দিয়ে চলছে অপারেশন। শুধু তাই নয়, রোগী আসতে না পারলে নিজেই কাপড় কাটার কাঁচি হাতে চলে যান রোগীর বাড়িতে। রোগীর বাড়িতে বসেই করেন জটিল অপারেশন।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এই ভুয়া চিকিৎসকের অপারেশনের ফলে অনেক রোগী মারাত্মক ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়েছেন। কেউ কেউ পচন ধরা ক্ষতের শিকার হয়েছেন। আবার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে রোগীর মৃত্যুও হয়েছে।

সরেজমিনে রশিদা বেগমের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, ঘরে মধ্যে রোগী দেখছেন রাশিদা খাতুন। খাটের নিচে, ওপরে ও চেয়ারের ওপর গজ ও রক্ত মাখা তুলা পড়ে রয়েছে। অন্য আরও একটি ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে ওষুধের প্যাকেট। ঘরের দেয়ালে ঝুলছে সিরিঞ্জ।

এদিকে রশিদা বেগম অপচিকিৎসায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কেশবপুর উপজেলার চাঁদড়া গ্রামের আছিয়া বেগম নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল রশিদা খাতুনের বিরুদ্ধে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী। কয়েকবার স্বাস্থ্য বিভাগ অভিযান পরিচালনা করার উদ্যোগ নিলে রশিদা খাতুন বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত আছিয়া বেগমের ছেলে আনিচুর রহমান বলেন, আমার মাকে রশিদা বেগমকে দেখাই। দেখে বলেন, জটিল সমস্যা। অপারেশন করতে হবে। পরে রশিদা বেগম বাড়িতেই অপারেশন করেন। বাড়িতে আনলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে আমার মা মারা যান।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমার বাড়িতে এসে রশিদা বেগম পাইলস অপারেশন করেন। কীভাবে অপারেশন করেছে জানতে চাইলে বলেন, প্রথমে অবশ করে নেন। তারপর কাপড় কাটা কাঁচি দিয়ে কেটে দেন। এ অপারেশনের কারণে আমার জীবন থেকে ভালো খাবার বন্ধ হয়ে গেছে এবং মলদ্বারের বামপাশ নষ্ট হয়ে গেছে।

অভিযাগের বিষয়ে রশিদা বেগম বলেন, আমার স্বামী প্যারামেডিকেল ডাক্তার ছিলেন। তার কাছ থেকে হাতে কলমে কাজ শেখা। তার মৃত্যুর পরে আমি চিকিৎসা দিচ্ছি। আমি সার্জারি ডাক্তার না হয়ে অপারেশন করেছি। এটা আমার ভুল হয়েছে।

রোগীর মৃত্যু বিষয়ে তিনি বলেন, অপারেশনের পর তো আর কোনো দ্বায় দায়িত্ব আমার থাকে না। অপারেশন পর্যন্ত আমার দায়িত্ব।

যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদেক রাসেল বলেন, ভুয়া ডাক্তার রশিদা বেগমকে হাতেনাতে ধরার জন্য কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু তিনি বাড়ি থেকে বারবার পালিয়ে গেছেন। তাকে আটকের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।